• আচমকাই ফিরল স্মৃতি, দু’বছর পর দাদার সঙ্গে বীরপাড়া থেকে বিহারে ফিরলেন বধূ
    বর্তমান | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: স্মৃতি ফিরে পাওয়ায় বীরপাড়া থানার ডিমডিমায় নিরাশ্রয়দের আস্তানা ‘হেভেনস শেল্টার’ থেকে বিহারে ফিরলেন গৃহবধূ বাসন্তী সোরেন। রবিবার মাদারিহাট থেকে ট্রেনে চেপে বোনকে নিয়ে বাড়ি রওনা দিলেন বাসন্তীদেবীর দাদা নিরঞ্জন সোরেন। ভিনরাজ্যের অসহায় দুই ভাই বোনকে বিদায় জানালেন স্থানীয় বিধায়ক জয়প্রকাশ টোপ্পো এবং বৃদ্ধাশ্রম ‘হেভেনস শেল্টারের’ কর্ণধার সাজু তালুকদার।

    কীভাবে বীরপাড়ার ওই বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই হল বিহারের গৃহবধূর? জানা গিয়েছে, বিহারের মুঙ্গের জেলার ধারারার থানার পাহাড়ী গ্রাম সাবাইয়াতে বিয়ে হয়েছিল মানসিক ভারসাম্যহীন গৃহবধূ বাসন্তী সোরেনের। দু’বছর  আগে পথ হারিয়ে কোনওভাবে ভিনরাজ্যের ওই গৃহবধূ চলে আসেন বীরপাড়ায়। তাঁর ঠাঁই হয় ডিমডিমার এই  বৃদ্ধাশ্রমে। কিন্তু স্মৃতিভ্রমের কারণে সমস্যায় পড়তে হয় বৃদ্ধাশ্রম কর্তৃপক্ষকে। কারণ, বাড়ির ঠিকানা ও আত্মীয় পরিজন কারও নাম বলতে না পারায় মানসিক ভারসাম্যহীন বাসন্তীদেবীকে বাড়িতে পাঠাতে পারছিল না আশ্রম কর্তৃপক্ষ। অগত্যা দু’বছর ধরে আবাসিক হিসাবে বাসন্তীদেবীকে রেখে দেওয়া হয়। মাস দু’য়েক আগে হঠাৎই একদিন বাসন্তীদেবী স্মৃতি ফিরে পান। গড়গড় করে বাড়ির ঠিকানা ও বাড়ির সদস্যদের নাম বলতে থাকেন। এরপরই বাসন্তীদেবীকে গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর উদ্যোগ নেন বিধায়ক জয়প্রকাশবাবু। হেভেনস শেল্টারের কর্ণধারকে রেকি করতে গত সপ্তাহে বিহারে পাঠানো হয়।

    মুঙ্গেরের উষর পাহাড়ী সাবাইয়াতে গিয়ে জানতে পারেন সেখানেই বাসন্তীদেবীর বিয়ে হয়। শ্বশুরবাড়িতে ওই গৃহবধূর সন্তানও আছে। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাসন্তীদেবীকে ঘরে তুলতে রাজি নয়। কেন? কারণ, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অভিযোগ, মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে একদিন বাসন্তীদেবী বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন। শেষপর্যন্ত শ্বশুরবাড়ি থেকে দুই কিমি দূরে গ্রামে বাসন্তীদেবীর বাপের বাড়ির খোঁজ পান সাজুবাবু। তারপরই বাসন্তীদেবীর দাদা নিরঞ্জনবাবুকে নিয়ে ডিমডিমায় ফিরে আসেন সাজুবাবু। 

    এদিন বোনকে নিয়ে বিহারে ফিরে যাওয়ার আগে নিরঞ্জনবাবু বলেন, বিধায়ক জয়প্রকাশবাবু ও হেভেন শেল্টারের কর্ণধার সাজুবাবুকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই। তাঁরা সাহায্য না করলে বোধহয় বোনকে ফিরে পেতাম না।

    বিধায়ক বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসাবে বাসন্তীদেবীকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি মাত্র। সাজু তালুকদার বলেন, বাসন্তীদেবীকে তাঁর নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)