• মল্লারপুরের মাঠে পড়ে যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ, খুনের অভিযোগ তুলল পরিবার
    বর্তমান | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: রবিবার সকালে রেল লাইনের পাশের মাঠ থেকে এক যুবকের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে মল্লারপুর থানার প্রচন্দ্রপুর গ্রামে চাঞ্চল্য ছড়ায়। মৃতের নাম দাবির শেখ ওরফে বগরু(৩৪)। এদিন সকালে গ্রামের পাশ দিয়ে যাওয়া রেল লাইনের পাশের মাঠে তাঁর ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। বেঁচে আছে ভেবে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে বাড়ি নিয়ে আসেন। পরে মৃত্যু নিশ্চিত হতেই কবরও খোঁড়া হয়। সেই খবর পেয়ে গ্রামে পৌঁছয় পুলিস। তখন পরিবারের লোকজন দাবি করেন, তাঁকে খুন করা হয়েছে। যদিও পুলিসের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, রাতের দিকে কোনও ট্রেনের ধাক্কায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য রামপুরহাট মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

    পুলিস ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রচন্দ্রপুর গ্রামের মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা বগরু পেশায় নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন। শনিবার রাত ৮টা নাগাদ একটি ফোন পেয়ে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এদিন সকালে গ্রামের পাশ দিয়ে যাওয়া রেললাইনের পাশের মাঠ থেকে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদেহের মাথার পিছনে, পেট সহ শরীরের নানা জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাঁর মোবাইলটিও গায়েব। মৃতের স্ত্রী কোটি বিবি বলেন, রাত ৮টায় একটি ফোন পেয়ে স্বামী বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। খাবার খাওয়ার জন্য সাড়ে ৮টায় ফোন করি। কিন্তু, ফোন বেজে যায়। পরে ৯টা নাগাদ ফোন করলে সুইচ অফ আসে। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। সকালে খবর পেয়ে লাইনের ধারের মাঠে গিয়ে দেখি, রক্তাক্ত অবস্থায় স্বামী পড়ে রয়েছে। তখনও শ্বাস চলছিল। বাড়িতে নিয়ে আসার সময় স্বামীর মৃত্যু হয়। তাঁর দাবি, স্বামীকে খুন করা হয়েছে। ফোনটিও পাওয়া যায়নি। যারা স্বামীকে নৃশংসভাবে খুন করছে তাদের শাস্তি চাই। 

    মৃতের বোন নাসিমা বিবি বলেন, দাদা নেশা করত না। কারও সঙ্গে ঝামেলাও ছিল না। খুবই ভালো ছিল। আমরা দুঃস্থ পরিবারের। বাবা-মা নেই। ছোট বাচ্চাকে নিয়ে বউদি এখন কোথায় যাবে? কীভাবে সংসার চালাবে? যারা দাদাকে মেরে ফেলল তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। 

    এদিন ঘটনাস্থলে এসে পুলিসের তদন্তকারী দল রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। পুলিস জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ট্রেনের ধাক্কায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্ত এড়াতে পুলিসকে না জানিয়ে ভোরে দেহ তুলে নিয়ে এসে কবর দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিল পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু, দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে ময়নাতদন্ত ছাড়া কবর দেওয়া যায় না। সকালে খবর পেয়ে বাড়িতে যাওয়া হয়। এরই মধ্যে মৃতের শ্বশুরবাড়ির লোকজন এসে বলতে থাকে খুন করা হয়েছে। তাপরই দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। দুপুরে মৃতের পরিবারের সদস্যদের থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী অফিসাররা।
  • Link to this news (বর্তমান)