• গ্রাহকদের সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা তুলে ধাঁ অফিসার, পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের আর্থিক সংস্থার
    বর্তমান | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ দেওয়ার পর কিস্তির প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকা হাতিয়ে বেপাত্তা রিলেশনশিপ ম্যানেজার। পাঁশকুড়ার মেচগ্রামের ঘটনা। ঋণ নেওয়া ১১২জন নিয়মিত কিস্তির টাকা পরিশোধ করলেও তাঁদের টাকা জমা পড়েনি সংস্থার অ্যাকাউন্টে। খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ওই সংস্থারই এক কর্মী বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিস্তির টাকা সংগ্রহ করেছেন। অথচ, সেই টাকা সংস্থার অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি। ওই ঘটনায় ঋণগ্রহীতারা বিপাকে পড়েছেন। তাঁরা ওই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ জানানোর পর গত ১১ এপ্রিল সংস্থার ডিভিশনাল ম্যানেজর ধ্রুবনাথ সামন্ত পাঁশকুড়া থানায় এফআইআর করেছেন। ওই রিলেশনশিপ ম্যানেজার মোট আট লক্ষ ৩৫ হাজার ২৪৮ টাকা হাতিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। পাঁশকুড়া থানার আইসি সমর দে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

    ২০১৭-’১৮ সাল থেকে পাঁশকুড়ার মেচগ্রামে ওই আর্থিক সংস্থার অফিস রয়েছে। ওই সংস্থা ৩০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়। সাপ্তাহিক এবং মাসিক দুই পদ্ধতিতে কিস্তির টাকা সংগ্রহ করা হয়। সংস্থার ফিল্ড অফিসার এবং রিলেশনশিপ অফিসাররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওই কিস্তির টাকা আদায় করেন। হাওড়ার সাঁতরাগাছির এক যুবক ওই সংস্থার অফিসে এক বছর ধরে টাকা আদায়ের কাজে যুক্ত ছিল। গত তিন-চার মাস ধরে ওই কর্মী অফিসে যাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছে না। সম্প্রতি ওই সংস্থার ডিভিশনাল অফিসার ধ্রুবনাথবাবু নিয়মিত কিস্তির টাকা না মেটানো ঋণগ্রহীতাদের অফিসে ডেকে পাঠান। সেখানেই সামনে আসে আসল রহস্য। জানা যায়, মোট ১১২জন ঋণগ্রহীতা নিয়মিত কিস্তির টাকা মেটালেও বই আপডেট করা হয়নি। সমস্ত টাকাই সংস্থার ওই কর্মী হাতিয়ে নিয়েছে।

    পাঁশকুড়ার ওই অফিস থেকে প্রায় চার হাজার মানুষকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। ছোটখাটো ব্যবসা, হাতের কাজ, দোকান, চাষাবাদ, পোল্ট্রি খামার সহ নানা কারণে সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁদের ঋণ দেওয়া হয়। এভাবে ঋণ নেওয়া অনেকেই নিয়মিত কিস্তির টাকা শোধ করেও বই আপডেট না করায় সমস্যায় পড়েছেন। ওই আর্থিক সংস্থার পক্ষ থেকে গোটা ঘটনার তদন্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত রিলেশনশিপ অফিসারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের জন্য পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।  ওই সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়া মানসী মাইতি বলেন, আমরা নিয়মিত কিস্তির টাকা শোধ দিয়েছি। তারপর আচমকা কিস্তির টাকা শোধ না করার কারণ দেখিয়ে নোটিস দিয়ে সংস্থার অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। আমরা তাতে অবাক হই। তারপর জানতে পারি, সংস্থার কর্মীই জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্ত। ওই আর্থিক সংস্থার ডিভিশনাল ম্যানেজার ধ্রুবনাথবাবু বলেন, অভিযুক্ত কর্মী আমাদের অফিসে প্রায় এক বছর ধরে কর্মরত ছিল। রিলেশনশিপ অফিসার হিসেবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিস্তির টাকা সংগ্রহ করত। এভাবে আট লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করে আর অফিসে আসছে না। তার সঙ্গে যোগযোগও করা যাচ্ছে না। আর্থিক অসঙ্গতির বিষয়টি সামনে আসার পরই তার বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছি।
  • Link to this news (বর্তমান)