• বাবা-ছেলেকে হারিয়ে অথই জলে দিনমজুর পরিবার
    বর্তমান | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ধুলিয়ান: বাড়ির বারান্দায় বসে স্বামীর ছবির দিকে তাকিয়ে আছেন শান্তি দাস। চোখ দিয়ে অঝোরে জল ঝরছে। কথা বলার শক্তি নেই। চোখের সামনে খুন হতে দেখেছেন স্বামী ও শ্বশুরকে। ঘটনার একদিন বাদেও সেই আতঙ্কের ছাপ তাঁর চোখেমুখে স্পষ্ট। একই সঙ্গে বাড়ির দুই রোজগেরে সদস্যের মৃত্যুতে দিশেহারা অবস্থা গোটা পরিবারের। পুলিস মৃতদেহ ছাড়লে কীভাবে সৎকার হবে, সেই চিন্তায় মুহ্যমান পরিবারের সদস্যরা। ধুলিয়ানের জাফরাবাদের বাসিন্দা চন্দন দাস ও তাঁর বাবা হরগোবিন্দ দাস দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। নিয়মিত কাজ করতেন। দুজনের উপার্জনের অর্থে সংসার চলত। কিছু টাকা জমিয়ে ধীরে ধীরে বাড়ির কাজেও হাত দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু শনিবার কয়েক মুহূর্তের উত্তেজনায় প্রায় চার-পাঁচশো উন্মত্ত দুষ্কৃতী তাঁদের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে টেনে বের করে বাবা ও ছেলেকে। মারতে মারতে দুজনকে উঠোনে টেনে নিয়ে এসে ফেলে। তারপর সকলের চোখের সামনে বাপ-বেটাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করে। পরে পুলিস দেহ উদ্ধার করতে এলে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। নিহত চন্দনের স্ত্রী বলেন, দরজা ভেঙে ঘর থেকে টেনে বের করে নিয়ে গেল বাপ-বেটাকে। যখন তাণ্ডব চলছে পাড়া-প্রতিবেশী কেউ সাহায্যের জন্য আসেনি। একদল উন্মত্ত লোক কুপিয়ে খুন করে দিল আমার চোখের সামনে। পুলিসকে খবর দেওয়া হলেও তারা সময়মতো আসেনি। স্বামী ও ছেলেকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন হরগোবিন্দবাবুর স্ত্রী। তিনি বলেন, সব শেষ হয়ে গেল। ওই দুজনের রোজগারে আমাদের সংসার চলত। এখন কী নিয়ে থাকব আমরা। বিনা কারণে এভাবে মরতে হল ওদের। কখনও কারও সঙ্গে কোনও শত্রুতা ছিল না।  স্থানীয় এক প্রতিবেশী বলেন, এভাবে মৃত্যুতে পরিবারটি পুরো অসহায় হয়ে গেল।
  • Link to this news (বর্তমান)