• হাইস্কুলের চাকরি হারিয়ে প্রাথমিকে ফেরার হিড়িক, অনেকেই রিলিজ না নিয়ে প্রাথমিক ছেড়েছিলেন
    বর্তমান | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: চাকরি হারিয়ে নিজের পুরনো প্রাইমারি স্কুলেই ফিরতে চাইছেন শিক্ষকরা। সেইমতো আবেদন করতেও শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। যদিও রাজ্য সরকারের তরফে এনিয়ে কোনও নির্দেশিকা জারি করা হয়নি। কিন্তু, আগেভাগেই শিক্ষা সংসদে আবেদনপত্র জমা করে দিচ্ছেন শিক্ষকরা। সেইমতো আবেদনপত্র গ্রহণ করে রাখা হয়েছে। সুপ্রিম রায়ে চাকরিহারাদের অনেকেই হাইস্কুলের চাকরি পেয়ে প্রাথমিকের শিক্ষকতা ছেড়েছিলেন। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০জন শিক্ষক নিজের পুরনো স্কুলে ফিরতে চেয়েছেন। কিন্তু, তাঁদের আদৌ ফেরানো হবে কি না, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকজন শিক্ষক এনওসি না নিয়েই প্রাইমারি থেকে হাইস্কুলে যোগদান করেছিলেন। নদীয়া জেলার ডিপিএসসির চেয়ারম্যান দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, পুরনো প্রাইমারি স্কুলের চাকরিতে ফিরে যাওয়ার জন্য বেশ কিছু আবেদনপত্র জমা পড়ছে। শিক্ষকরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু, এই নিয়ে কোনও নির্দেশিকা জারি হয়নি। তবে তাঁদের আবেদনপত্র আমরা গ্রহণ করছি।

    উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী। শুধু নদীয়া জেলাতেই রয়েছেন ৯০০-র বেশি শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী। জেলার ৩০০টি স্কুলে তার প্রভাব পড়েছে। ২০১৬ সালের প্রথম স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট অনুযায়ী নদীয়া জেলার নবম ও দশম শ্রেণির ৬৩৬জন, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ১৯৭জন শিক্ষকের এবং গ্রুপ-সি ও ডি পদের ৭৩জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, চাকরিহারা শিক্ষকদের মধ্যে অধিকাংশই বিজ্ঞান বিভাগের। অঙ্ক, জীবন বিজ্ঞান, ভৌত বিজ্ঞান, রসায়ন বিভাগের শিক্ষকদের চাকরি গিয়েছে। যার ফলে বহু স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে।‌ একই স্কুলের এই ধরনের একাধিক শিক্ষক রয়েছেন। যেমন, কালীগঞ্জ ব্লকের মীরা হাইস্কুলে চাকরি হারানো ১১জন শিক্ষকের মধ্যে ৭জনই বিজ্ঞান বিভাগের।‌ 

    শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, চাকরিহারা শিক্ষকরা তাঁদের পুরনো কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারবেন। আর তাতেই পুরনো স্কুলে ফিরে যাওয়ার হিড়িক পড়েছে শিক্ষকদের মধ্যে। যদিও কতজন প্রাইমারির শিক্ষক হাইস্কুলের চাকরি পাওয়ার পর পদত্যাগ করেছিলেন,‌ তার চূড়ান্ত তালিকা নেই প্রশাসনের কাছেও। সেই তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে শিক্ষা সংসদের তরফে। প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, হাইস্কুলে যখন অনেক শিক্ষকের চাকরি হয়েছিল, তখন বেতনের সংশ্লিষ্ট পোর্টাল চালু ছিল না। এখন দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকজন শিক্ষক হাইস্কুলে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে রিলিজ নেননি। এরকম বেশ কিছু বিষয় আমাদের নজরে এসেছে।
  • Link to this news (বর্তমান)