নীলপুজোয় নবদ্বীপের বিভিন্ন শিবমন্দিরে ভিড়, হংসবাহন মন্দিরে ভক্তের সমাগম
বর্তমান | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: রবিবার নীলপুজো ঘিরে নবদ্বীপের বিভিন্ন শিবমন্দিরে সকাল থেকেই ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। এদিন সকালে উপবাস থেকে নানা বয়সের মহিলারা গঙ্গাস্নান সেরে ফুল-বেলপাতা, দুধ, গঙ্গাজল, ফল, মিষ্টি নিয়ে বিভিন্ন শিবমন্দিরে পুজো দিতে লাইন দেন।
৫০০ বছরের প্রাচীন বুড়োশিব, ঐতিহ্যবাহী যোগনাথ শিব, বাণেশ্বর শিব, দণ্ডপাণি শিব, আলোকনাথ শিব, বালকনাথ শিব ও পোড়ামাতলার ভবতারণ শিবের এদিন মহাসমারোহে পুজো হয়। এদিন মাজদিয়া-পানশিলা পঞ্চায়েতের গাজনতলার প্রাচীন হংসবাহন, বাবলারির সিদ্ধেশ্বর, ইদ্রাকপুর শিবমন্দিরেও গরম ও রোদ উপেক্ষা করে সকাল থেকে লাইন দিয়ে শিবের মাথায় জল ঢাললেন পুণ্যার্থীরা। নীলপুজো উপলক্ষ্যে এদিন বুড়োশিবতলায় মেলাও বসেছিল। এদিন গাজনতলার প্রাচীন হংসবাহন শিবমন্দিরে নীলপুজোয় কয়েকহাজার ভক্ত এসেছিলেন। সন্ধ্যায় প্রথা মেনে ৭৬জন সন্ন্যাসীর হংসবাহন শিবের সামনে বাণ দিয়ে কপালবন্ধন করেন। মন্দির প্রাঙ্গণে কদম বাজি পোড়ানো হয়।
হংসবাহন শিবমন্দিরের পরিচালন সমিতির সহ-সভাপতি তপনকুমার মণ্ডল বলেন, নীলপুজো উপলক্ষ্যে প্রায় ১০হাজার ভক্ত এদিন লাইন দিয়ে শিবের মাথায় জল ঢেলেছেন। এদিন সন্ধ্যায় প্রথা মেনে ৭৬জন সন্ন্যাসী হংসবাহন শিবের সামনে বাণ দিয়ে কপালবন্ধন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এরপর প্রায় ১৫ কুইন্টাল দুধের পরমান্ন ভোগ দেওয়া হয়েছে। মন্দির কমিটির সহ-সম্পাদক চিরঞ্জিৎ ঘোষ বলেন, নীলপুজো উপলক্ষ্যে অনেকেই গঙ্গাস্নান করে শিবমন্দির পর্যন্ত দণ্ডি কাটেন।
চাকদহের মদনপুরের বাসিন্দা সুস্মিতা সরকার বলেন, আমার বাপের বাড়ি নবদ্বীপের মাজদিয়া স্কুলমাঠে। ছোটবেলা থেকেই হংসবাহন শিবের কাছে পুজো দিয়ে আসছি। এখন আমি মদনপুর-২ পঞ্চায়েতের প্রধান। এখনও প্রতিবছর নীলপুজোয় বাবা হংসবাহনের মাথায় জল ঢালতে আসি। সকাল ৭টা থেকে পুজো দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। ১১টা বাজতে চললেও এখনও পুজো দেওয়ার সুযোগ পাইনি। স্বরূপগঞ্জের রেলবাজারের বধূ শিউলি সাহা বলেন, হংসবাহন শিবের কাছে আমি, আমার দিদি, জা, শাশুড়ি অনেকেই এসেছি। দুপুরে খুব রোদ। তাই সকাল ৭টা থেকে লাইন দিয়েছি।
বুড়োশিবতলা মন্দিরের সামনে পুতুল নিয়ে বসেছেন চটিরমাঠ ঘোষপাড়ার বাসিন্দা গৌরাঙ্গ মোদক। তিনি বলেন, শিব, দুর্গা, লক্ষ্মী, কৃষ্ণ, গণেশের মূর্তি বিক্রি করছি। এছাড়া, ছোট ছোট পাখি, বাঘ, সিংহের পুতুল এনেছি। এখন মোবাইলের যুগে মাটির পুতুলের প্রতি ছোটদের আকর্ষণ কম। তবু প্রবীণ কিছু মানুষ ছোটদের জন্য এগুলি কিনছেন।