ক্রেতার ভিড়ের সঙ্গে পাল্লা দিল দোকানির হাঁক-ডাক, শেষ রবিবার জমজমাট চৈত্র সেল
বর্তমান | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শুধু রোদ কমার অপেক্ষা। সন্ধ্যা নামতেই হাতিবাগান, গড়িয়াহাট, নিউমার্কেটে চৈত্র সেলে জিনিসপত্র কিনতে থিকথিকে ভিড়।
গাড়ির হর্ন ভেদ করে বিক্রেতাদের হাঁকডাকে গমগম করছে হাতিবাগান। ‘খালি ১০০! খালি ১৫০!’ শুনে ক্রেতারা ফেলছেন দাম গুলিয়ে। কুর্তির হ্যাঙারের সামনে দাঁড়িয়ে তবে বুঝলেন, আসলে প্যান্টের দাম ১০০ টাকা। আর কুর্তি ১৫০। দরদামের কোনও অবকাশ নেই। দোকানদার প্রথমেই জানিয়ে দিলেন, ‘ফিক্সড প্রাইস দিদি’। হাঁটতে হাঁটতে ঘাম গড়াচ্ছে, তারপর ভিড় জমছে ঠান্ডা পানীয়ের দোকানে। পয়লা বৈশাখের আগে শেষ রবিবার উত্তর থেকে দক্ষিণের বাজারগুলি রীতিমতো জমজমাট।
এখন পাশের দোকানের সঙ্গে শুধু নয় অনলাইনের সঙ্গেও প্রতিযোগিতা চৈত্র সেলের। হাতিবাগানে জামা কিনতে আসা তরুণীরা বললেন, ‘অনলাইন থেকে কিনি, এখান থেকেও কিনি। ভালো জিনিস মেলে।’ লাচ্ছা পরোটা খাচ্ছে মেয়ে। মা পাশে দাঁড়িয়ে। তাঁরা উল্টোডাঙা থেকে এসেছেন হাতিবাগান। মা স্বর্ণালী রায় বললেন, ‘আমার নীল ষষ্ঠীর পুজো। তাই খাচ্ছি না। নতুন বছর বলে নতুন চাদর কিনলাম। মেয়ের জামাও হল।’ বিক্রেতা অজয়বাবু বলেন, ‘বাজার মোটামুটি ভালো।’ রাস্তায় দাঁড়িয়ে হকাররা যখন খালি গলায় হাঁক দিচ্ছেন, পাশের শপিং মল থেকে ভেসে আসছে মাইকিং। ঠান্ডা ঘর থেকে ‘অফার’ ঘোষণা হচ্ছে। হাতিবাগানে বাচ্চাদের নজর হাওয়াই চড়কির দিকে। হাওয়ার চোটে ঘুরছে চড়কি। তা হাতে নিয়েই খুশি খুদেরা। হাতিবাগানের থেকে কিন্তু কোনও অংশে কম যাচ্ছে না দক্ষিণের গড়িয়াহাট।
রোদ মাথায় নিয়েই সেখানে ভিড় ক্রেতাদের। বাহারি সানগ্লাসের দিকে চোখ অনেকের। কারও নজর ‘যা কিছু ৫০’য়ের কানের দুলের দিকে। হ্যাঙারে ঝোলানো কুর্তি টেনে মেয়ের পিঠে নিজেই বসিয়ে মাপ নিয়ে নিলেন মা। পাশে দাঁড়িয়ে বাবা। ঢাকুরিয়ার বাসিন্দা তাঁরা। বাবা প্রত্যয় সাহা বললেন, ‘মা আর মেয়েই কিনছে। ওরাই দরদাম করছে। ছুটি বলে সকলে মিলে একটু বেরনো, কেনাকাটা, এই আর কি।’ নিউ মার্কেটে তো আবার কেনাকাটা বিরামহীন। পাপড়ি চাট খেতে খেতে সেখানে শপিং চলল। কেউ পাঞ্জাবি, কেউ শাড়ি আবার কারও পছন্দ হালকা রঙের জামা। সাজগোজ-খাওয়াদাওয়া সবমিলিয়ে চৈত্র সেল জমজমাট।