এই সময়: সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় আন্দোলন করতে গিয়ে আইন হাতে তুলে না–নেওয়ার বার্তা দিল ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের সংগঠন। মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ আইন–বিরোধী আন্দোলনে যাঁরা হিংসায় যুক্ত থেকেছেন তাঁদের নিন্দা করেছেন ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের সংগঠনের নেতৃত্ব।
সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে আগামী পরশু, ১৬ তারিখ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা রয়েছে। তাতে বড় জমায়েতের প্রস্তুতি শুরু করেছে সংখ্যালঘু সংগঠন ‘ইমাম মুয়াজ্জিন ও বুদ্ধিজীবী সম্মেলন’। সেই প্রস্তুতি নিয়ে রবিবার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে এই সংগঠন।
নাখোদা মসজিদের ইমাম, রাজ্যের সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান–সহ সংখ্যালঘু সমাজের অনেক বিশিষ্ট মুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রত্যেকেই মুর্শিদাবাদে হিংসার ঘটনার নিন্দা করেছেন।
‘ইমাম মুয়াজ্জিন ও বুদ্ধিজীবী সম্মেলন’–এর অন্যতম মুখ মৌলানা বাকিবিল্লা এ দিন বলেন, ‘ওয়াকফ আইন নিয়ে যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁদের স্পষ্ট ভাবে বলছি, আপনারা গণতান্ত্রিক পদ্ধিতিতে আন্দোলন করুন। কেউ হাতে আইন তুলে নেবেন না।’ রাজ্যের সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমেদ হাসান ইমরান বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ভাবে আন্দোলন করুন। এই আন্দোলন যেন সহিংস না হয়। যাঁরা এই কাজ করছেন, তাঁদের নিন্দা করব। পুলিশের কাছে আবেদন করব, সংযত আচরণ করবেন। আন্দোলন যাতে শান্তিপূর্ণ থাকে তার দায়িত্ব পুলিশেরও।’ মৌলানা আবদুল্লার কথায়, ‘মুর্শিদাবাদ–সহ যেখানে যেখানে যাঁরা অশান্তি করছেন, তাঁদের আমি মুসলিম বলে মনে করি না।’
১৬ তারিখের সভায় যাঁরা উত্তরবঙ্গ অথবা দূরবর্তী জেলা থেকে আসবেন, তাঁদের অনেকে ১৫ তারিখই কলকাতায় চলে আসতে পারেন। ইন্ডোরের পাশে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে তাঁদের রাতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নেতাজি ইন্ডোরের সভার বার্তা পশ্চিমবঙ্গের সীমানা ছাড়িয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে করছেন নাখোদা মসজিদের ইমাম মওলানা শফিক কাসেমি — ‘এই অনুষ্ঠান থেকে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও সারা ভারতে বার্তা যাবে। মুখ্যমন্ত্রী ওয়াকফ নিয়ে ইতিমধ্যে তাঁর কথা বলেছেন, ওই দিন তাঁর অবস্থান স্পষ্ট হবে।’
সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে ইতিমধ্যেই একাধিক মামলা হয়েছে। ইমাম ও মুয়াজ্জিনরা মনে করছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতে তাঁরা ন্যায়বিচার পাবেন। সংশোধিত ওয়াকফ আইন পাশ হওয়ার পরে আগামী দিনে অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তিতে হাত পড়বে বলে ইমামদের সন্দেহ। মৌলানা আবদুল্লার কথায়, ‘আগামী দিনে খ্রিস্টানদের সম্পত্তিও দখল হবে। রাহুল গান্ধী এ কথা বলেছেন। ওঁর কথাকে সমর্থন করি।’ নেতাজি ইন্ডোরের সভায় মমতা ছাড়াও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম–সহ রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী থাকতে পারেন। ইমাম মুয়াজ্জিন ছাড়াও থাকতে পারেন সংখ্যালঘু সমাজদের বুদ্ধিজীবীরা।