• শুভেন্দুর মুখে ‘চূড়ান্ত লড়াই’, মুর্শিদাবাদ নিয়ে সরব যোগীও
    এই সময় | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়: আগামী ২১ এপ্রিল চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশের ডাকা নবান্ন অভিযানে পতাকা ছাড়া সামিল হওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন বঙ্গ–বিজেপি নেতৃত্ব। এ বার তাঁরা নিজেরাই নবান্ন অভিযানের তোড়জোড় শুরু করেছেন। দলীয় স্তরে ঠিক হয়েছে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে অথবা মে মাসের গোড়ায় এই কর্মসূচি হবে।

    রবিবার কলেজ স্কোয়্যারের সভা থেকে এই কর্মসূচির কথা জানিয়ে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আমরা চূড়ান্ত একটা লড়াই দিতে চাই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যে আসছেন। তার পরেই পার্টির রাজ্য নেতৃত্ব বসে ঠিক করবেন, কবে নবান্ন অভিযান হবে।’

    সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৪ এপ্রিল সরকারি কাজে কলকাতায় আসার কথা প্রধানমন্ত্রীর। তাঁর সফরের মুখে নবান্ন অভিযানের মতো আইন–অমান্য কর্মসূচি করতে চাইছে না বিজেপি। তাই মোদীর সফরের শেষেই নবান্ন অভিযানের পরিকল্পনা তাদের। ২১ তারিখ চাকরিহারাদের একাংশের নবান্ন অভিযানেও যে বিজেপি পতাকা ছাড়াই সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবে, সেটাও এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন শুভেন্দু।

    নিয়োগ দুর্নীতি ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের উপরে স্নায়ুর চাপ বাড়ানোই আপাতত বিজেপির লক্ষ্য। তার জন্য লাগাতার আন্দোলনের বার্তা দিয়ে কলেজ স্কোয়্যারের সভায় বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘এ বার থেকে প্রতি বছর ১৬ এপ্রিল হিন্দু শহিদ দিবস হিসেবে পালন করা হবে। আগামী ১৬ থেকে ২০ এপ্রিল রাজ্যের প্রতিটি জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি হবে। জেলাশাসকের দপ্তর ঘেরাও হবে।’ শুভেন্দুর সংযোজন, ‘২৬–এ ক্ষমতায় এলে মুর্শিদাবাদে নিহত পিতা–পুত্রকে সরকারি সম্মান দেবো।’

    রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়াতে এ দিনই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। তাঁর দবি, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী চার জেলায় আফম্পা জারি করতে হবে, যাতে সেখানে আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি সেনাবাহিনীর হাতে চলে যায়। যদিও সাংসদের দাবিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে। কিন্তু এ সব করে ওদের কোনও লাভ হবে না।’

    শুধু রাজ্যের বিজেপি নেতারাই নন, মুর্শিদাবাদের আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে হাতিয়ার করে বাং‍লার তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও। এ দিন লখনৌয়ে তিনি বলেন, ‘ওয়াকফ আইনের বিরোধিতার নামে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে হিংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। হিন্দুদের খুন করা হচ্ছে। তাঁদের বাড়ি–ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকার কি করছে?’

    এ দিন কলেজ স্কোয়্যারের সভা শেষে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করে বিজেপি। তবে সিপিএমের দাবি, প্রতিবাদের নামে নাটক করছে বিজেপি। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কথায়, ‘গোটা দেশ জুড়েই ওয়াকফ আইনের বিরোধিতা হচ্ছে। হঠাৎ মুর্শিদাবাদেই কেন অশান্তি হচ্ছে! চাকরিহারা শিক্ষকদের কান্না থেকে নজর ঘোরাতে বিজেপি আর তৃণমূল যৌথভাবে এই অশান্তি করেছে।’

  • Link to this news (এই সময়)