• পদ্মে ঐক্যের সুর? মিছিলে একসঙ্গে পা মেলালেন তিনমূর্তি
    এই সময় | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়: শুধু তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে লড়াইয়ের বার্তাই নয়, সেই লড়াই যে বঙ্গ–বিজেপির সব শিবির হাতে হাত মিলিয়ে লড়ছে, সে বার্তাটাও স্পষ্ট ভাবে দিতে চাইছে গেরুয়া শিবির। রবিবার তাই নিয়োগ দুর্নীতি এবং রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পদ্মের প্রতিবাদ মিছিল একসঙ্গে হাঁটতে দেখা গেল রাজ্য বিজেপির তিন শীর্ষ নেতা সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষকে।

    কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত তঁারা মিছিলে হাঁটেন। শেষ কবে এই তিন নেতাকে একসঙ্গে দলের কোনও প্রকাশ্য কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছে, তা মনে করতে পারছেন না বঙ্গ–বিজেপির বর্ষীয়ান নেতারাও। এ দিন সুকান্ত–শুভেন্দু–দি‍লীপ একসুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে নিশানা করেন। তাৎপর্যপূর্ণ হলো, এই তিন জনের ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতাদেরও এ দিন পাশাপাশি ওই মিছিলে হাঁটতে দেখা গিয়েছে।

    বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব চাইছেন, সুকান্ত, শুভেন্দু আর দি‍লীপের মধ্যে দূরত্ব মুছতে। কারণ বঙ্গ–বিজেপিকে একসূত্রে গাঁথতে না–পারলে যে বাং‍লা থেকে তৃণমূলকে উৎখাত করা যাবে না, তা বিলক্ষণ বুঝে গিয়েছেন অমিত শাহরা। কিন্তু কাজটা যে মোটেই সহজ নয়, তা ২০২৪ লোকসভা ভোটের আগে ভা‍লো ভাবেই বুঝতে পেরেছিল দিল্লি। গত লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির আসন কমার একটা বড় কারণ যে রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব, সেটাও উঠে এসেছে শাহদের নির্বাচনী ফলাফল পর্যালোচনায়।

    ২৬–এর বিধানসভা ভোটের আগে তাই সুকান্ত–শুভেন্দু–দিলীপকে একসূত্রে বাঁধতে তৎপর হয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যার ফলে সম্প্রতি দিল্লিতে সুকান্তর বাসভবনে ফুল হাতে শুভেন্দুকে হাজির হতে দেখা যায় বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের অভিমত। এর কিছু দিন বাদেই বিধানসভায় বিজেপির ঘরে একসঙ্গে বসে মধ্যাহ্নভোজন সারেন দিলীপ আর শুভেন্দু। এর পরেই রবিবার সুকান্ত–শুভেন্দু–দিলীপের একসঙ্গে মিছিলে হাঁটার মধ্যে যে নির্দিষ্ট যোগসূত্র রয়েছে, তাতে সন্দেহ নেই দলের অনেকের।

    রাজ্য বিজেপির এক পদাধিকারীর কথায়, ‘লোকসভা ভোটে আসানসোল দুর্গাপুর কেন্দ্র থেকে হারার পরে দিলীপ ঘুরিয়ে শুভেন্দুকেই দায়ী করেছিলেন। অন্যদিকে শুভেন্দু বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকে কমফোর্ট ফিল করেন না বলে প্রকাশ্যে খোঁচা দিয়েছিলেন সুকান্ত। শীর্ষ নেতাদের মধ্যে এ সব দড়ি টানাটানির ছবিটা বদলের প্রয়োজন ছিল। ওঁরা তিন জন সচেতন ভাবেই সেই ছবিটা বদলের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।’

    তবে বিজেপির অন্য একটি অংশের মতে, খুব শিগগিরই দলের নতুন রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা হবে। অতীত রেকর্ড বলছে, নতুন সভাপতির নাম ঘোষণার পরে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সেটা যাতে না হয়, তাই এখন থেকেই ঐক্যবদ্ধ বঙ্গ–বিজেপির ছবি তুলে ধরার নির্দেশ সুকান্ত–শুভেন্দু–দি‍লীপকে দিয়েছেন শাহরা। দিনকয়েক আগে তামিলনাড়ুতে বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়েছে। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বর একাংশের ধারণা, এ বার পালা বাংলার। তবে এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন সুকান্ত–শুভেন্দু–দিলীপরা। তিন জনেই ঐক্যবদ্ধ সুরে বলছেন, এ বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই নেবেন।

  • Link to this news (এই সময়)