পেট্রাপোল হয়ে প্রায় দেড় গুণ বেশি মূল্যের বাংলাদেশি পণ্য রফতানি হয়েছে তৃতীয় দেশে, দাবি রিপোর্টে
আনন্দবাজার | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল স্থলবন্দর হয়ে আগের তুলনায় প্রায় দেড় গুণ বেশি মূল্যের পণ্য তৃতীয় দেশে রফতানি করেছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার এই স্থলবন্দরটি ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছাড়াও পেট্রাপোল হয়ে অন্য দেশেও পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ। পিটিআই জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে পেট্রাপোল হয়ে বাংলাদেশ ৪৬ শতাংশ বেশি মূল্যের ‘ট্রান্সশিপমেন্ট’ পণ্য পাঠিয়েছে। একটি দেশ যখন অন্য কোনও দেশের শুল্ককেন্দ্র হয়ে তৃতীয় কোনও দেশে পণ্য রফতানি করে, সেই প্রক্রিয়াকে ‘ট্রান্সশিপমেন্ট’ বলা হয়।
২০২০ সালের ২৯ জুন থেকে বাংলাদেশকে রফতানির ক্ষেত্রে এই সুবিধা দিয়ে আসছিল ভারত। তবে সম্প্রতি ওই সুবিধা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত ৮ এপ্রিল ভারত সরকার ওই সিদ্ধান্ত নেয়। পিটিআই জানিয়েছে, গত ৯ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ থেকে কোনও ‘ট্রান্সশিপমেন্ট’ পণ্য পেট্রাপোল হয়ে প্রবেশ করেনি। তবে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্বাভাবিকই রয়েছে। স্থলবন্দরের এক কর্মী সংগঠন ‘পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট্স’ স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পিটিআই জানিয়েছে, সদ্য সমাপ্ত অর্থবর্ষে পেট্রাপোল হয়ে তৃতীয় দেশের রফতানির জন্য বাংলাদেশি পণ্য আগের তুলনায় বেশি প্রবেশ করেছে।
ওই সংগঠনের ‘ট্রান্সশিপমেন্ট’ সংক্রান্ত তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে পেট্রাপোল হয়ে ৩৪৭৩টি ট্রাক ভারতে প্রবেশ করেছিল। মোট পণ্যের মূল্য ভারতীয় মুদ্রায় ২৩৫৭ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা। গত অর্থবর্ষে ভারতে প্রবেশ করেছিল ৪৮৬১টি ট্রাক। তাতে মোট ৩৪৪৬ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকার পণ্য এ দেশে আসে। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে তৃতীয় দেশে পণ্য রফতানির জন্য আসা ট্রাকের সংখ্যা ৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। রফতানি পণ্যের মূল্যের দিক থেকেও তা প্রায় ৪৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পিটিআই অনুসারে, ভারত সরকারের নতুন সিদ্ধান্তের পরে গত ৯ এপ্রিল বাংলাদেশের বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে তৃতীয় দেশে রফতানির জন্য আসা চারটি ট্রাককে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশকে এই সুবিধা দেওয়া বন্ধ করার বিষয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশকে ওই সুবিধা দেওয়ার ফলে এ দেশের বন্দর এবং বিমানবন্দরগুলিতে ভিড় বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এর ফলে ভারতীয় সংস্থাগুলির রফতানিতে সমস্যা হচ্ছিল। সেই কারণে বাংলাদেশকে ওই সুবিধা দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। তবে এর জন্য ভারতের মাটি হয়ে নেপাল এবং ভূটানে পণ্য রফতানি করতে বাংলাদেশের কোনও সমস্যা হবে না।