'বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ থেকে লোক ঢুকিয়ে মুর্শিদাবাদ ঠান্ডা করে দেব', হুঙ্কার BJP-র অর্জুনের
আজ তক | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
মুর্শিদাবাদে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হাইকোর্টের নির্দেশে বৃহস্পতিবার রাতে তিনটি মহকুমায় টহল শুরু করেছে বিএসএফ। ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পর উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় আদালত রাজ্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেয়। জঙ্গিপুর, নবদ্বীপনগর ও সামগ্রামপুর মহকুমায় ফ্রন্টিয়ার গার্ড বাহিনীর জওয়ানরা সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্ট বসিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।
এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা অর্জুন সিং। তিনি প্রশ্ন করেন, “BSF কি হাতে চুড়ি পরে আছে? লাঠি নিয়ে পাথর নামাচ্ছে?” তার মতে, রাজ্যের নয়, রাজ্যের বিরুদ্ধে মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। “মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি ‘ঠান্ডা’ করতে বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ থেকে মানুষ এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে,” হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
অর্জুন সিং মূলত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপালের ভূমিকাকে উদ্দেশ্য করে তীব্র সমালোচনা করেন। “রাজ্যপালকে দেখি না, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীই প্রশাসনের কাজ করে চলেছেন,” বলেন তিনি। উল্লেখ্য, শুভেন্দু অধিকারী হাইকোর্টে মামলা করেন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের জন্য; তারপরই আদালত নির্দেশ দেয়।
বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজ্য পুলিশের সহযোগী হিসেবে কাজ করবে। দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের আইজি কর্নি সিং শেখাওয়াত বলেন, “আমরা স্বাধীনভাবে পদক্ষেপ করছি না; পুলিশ ও রাজ্য প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী সাহায্য করছি। যদি আরও কোম্পানির প্রয়োজন হয়, তা আমরা সরবরাহ করব।”
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, মুর্শিদাবাদে ইতিমধ্যেই ৩০০ জন বিএসএফ জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে; আর পাঁচটি কোম্পানি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গতকাল রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব ভিডিও কনফারেন্সে রাজ্যপাল ও ডিজি-কে পরিস্থিতি মোকাবিলায় নির্দেশনা দেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বেশ কিছু এলাকায় পুলিশ সহিংসতা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছিল। কিছু গ্রামে পুলিশ অতর্কিতে লাঠি চালিয়েছিল, তাতে অর্ধশতাধিক নিরীহ মানুষ আহত হয়। এরপরই বিএসএফ মোতায়েনের দাবি ওঠে।
রাজ্যের বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, “মুর্শিদাবাদকে ‘ঠান্ডা’ করার নাম করে জনজীবন বিপর্যস্ত করা হচ্ছে।” রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে তর্ক—কার ইচ্ছা বাস্তবায়িত হচ্ছে, রাজ্যের স্বার্থে নাকি কেন্দ্রীয় স্বার্থে?