• অশান্তিতে পুত্র প্রাণ হারানোর পরও দিয়েছিলেন শান্তির বার্তা, সেই ইমাম বলছেন, ‘প্রতিবাদ হোক, অশান্তি নয়’
    আনন্দবাজার | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • অশান্ত হয়ে ওঠা শহরে প্রাণ গিয়েছিল তাঁর ১৬ বছরের ছেলের। সেই ছেলের দেহের সামনে দাঁড়িয়ে শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। আসানসোলের নুরানি মসজিদের সেই ইমাম ইমদাদুল্লা রশিদির এখন বার্তা, প্রতিবাদ হোক, তবে অশান্তি নয়। সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় মুর্শিদাবাদে গোলমালের প্রসঙ্গে রবিবার তিনি বলেন, “আর্জি জানাচ্ছি, প্রতিবাদ হোক, তবে তা শান্তিপূর্ণ ভাবে। কারও কোনও ক্ষতি যেন না হয়।”

    ২০১৮-র মার্চে আসানসোলে অশান্তির মধ্যে ইমামের ছেলে, দশম শ্রেণির ছাত্র সিবতুল্লার দেহ মেলে। ওই ঘটনার পরে ইমাম বার্তা দিয়েছিলেন, সন্তানের মৃত্যুর প্রত্যাঘাত হলে তিনি আসানসোল ছেড়ে চলে যাবেন। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে সেই বার্তা তাঁকে শান্তির ‘মুখ’ করে তুলেছিল। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়েও যখন নানা জায়গায় অশান্তি বেধেছিল, ইমাম বার্তা দিয়েছিলেন, “কাউকে কষ্ট দিয়ে কোনও আন্দোলন সফল হতে পারে না।”

    রবিবার মসজিদে বসে ইমাম বলেন, “মুর্শিদাবাদে কী ঘটছে, কিছু কিছু শুনেছি। আমরা এই আইনের বিরুদ্ধে। এটা অধিকারে হস্তক্ষেপ। সংবিধান আমাদের প্রতিবাদ করার যে অধিকার দিয়েছে, তা আমরা করছি। এ দেশে সবার স্বাধীন ভাবে বাঁচার এবং নিজের মত অনুযায়ী আচরণ করার অধিকার রয়েছে।” এর পরেই তিনি বলেন, “তবে তা করতে হবে কাউকে কোনও অসুবিধায় না ফেলে। তাই আমি আর্জি জানাচ্ছি, প্রতিবাদ হোক শান্তিপূর্ণ ভাবে। কোনও সম্পত্তির ক্ষতি যেন না করা হয়।”

    ইমাম জানান, তাঁর আশা, এই আইনের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে যে পিটিশন জমা পড়েছে, তাতে ফল হবে। তিনি বলেন, “আসানসোলেও আমি শান্তির বার্তা দিয়েছিলাম। এখন আসানসোলে শান্তিতেই সব কিছু হচ্ছে। সারা রাজ্যের মানুষকেও বলতে চাই, যে ভাবে আমরা মিলেমিশে ছিলাম, সে ভাবেই থাকব। পরস্পরের প্রতি ভালবাসা নিয়েই বাস করব।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)