পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটারের উপস্থিতি এবং এক নম্বরে একাধিক ভোটার কার্ড তৈরি নিয়ে শাসক, বিরোধীদের তরজা চরমে। সেই আবহে প্রায় সর্বস্তরের ভোট-আধিকারিকদের নিবিড় প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
চলতি বছরের শেষে ভোটার তালিকা সংশোধনের বিশেষ কর্মসূচি শুরু হবে। তার ভিত্তিতেই হবে রাজ্য বিধানসভা ভোট। তার আগে এই প্রশিক্ষণ শেষ করতে চাইছে কমিশন। সেই তালিকায় বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও), ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) থেকে জেলাশাসকেরা থাকছেন। দফায় দফায় দিল্লিতে প্রশিক্ষণ হবে। এই বিএলও-রাই স্থানীয় স্তরে সংশোধনের মূল কাজটা করেন।
প্রথা অনুযায়ী, বিএলও-র কাজে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নিয়োগ করার কথা নয়। প্রধানত প্রাথমিক শিক্ষকেরা এই দায়িত্ব সামলান। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, এ রাজ্যে বহু চুক্তিভিত্তিক কর্মী, আশাকর্মীদের বিএলও হিসেবে নিয়োগ করা হয়। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, প্রথা মেনে স্থায়ী চাকুরীজীবী বিএলও-দেরই মান্যতা দেবে কমিশন। ফলে দিল্লির প্রশিক্ষণে তাঁদেরই পাঠানো হবে। সে ক্ষেত্রে কত জন চুক্তিভিত্তিক কর্মী বিএলও-র দায়িত্ব পালন করছেন, তা বাছাই করার সুযোগ থাকবে কমিশনের কাছে।
সূত্র জানাচ্ছে, জেলাশাসক এবং ইআরও-দের সঙ্গে দেশের প্রায় ১০ লক্ষ বিএলও দিল্লিতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেবেন। তাঁদের মধ্যে এ রাজ্যের প্রায় ৮০ হাজার বিএলও রয়েছেন। এর জন্য বিভিন্ন রাজ্য থেকে ‘মাস্টার ট্রেনার’ নিয়োগ করা হয়েছে। কখনও কখনও রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককেও সেখানে হাজির থাকতে হবে। ভোটার তালিকা সংশোধন সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ তাঁরা কী ভাবে সামলাচ্ছেন, তার সবিস্তার তথ্য যেমন কমিশন-কর্তাদের জানাতে হবে, তেমনই কোনও খামতি থাকলে বিএলও-দের তা বুঝিয়ে দেবে কমিশন। এক কর্তার কথায়, “ব্লক বা বুথ স্তরে বিএলও-দের রিপোর্টের উপরেই ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা অনেকটা নির্ভরশীল। ভোটার তালিকা নিয়ে কমিশন কতটা সতর্ক, এটাও তাঁদের বুঝিয়ে দেওয়া হতে পারে।”