দূরপাল্লার ট্রেনে দেখা নেই রক্ষীদের, টিকিট পরীক্ষকের তৎপরতায় ধরা পড়ল ছিনতাইকারী
আনন্দবাজার | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
বাতানুকূল কামরায় এক মহিলা যাত্রীর হার এবং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর সময়ে টিকিট পরীক্ষকের তৎপরতায় নয়াদিল্লি স্টেশনে ধরা পড়েছিল এক দুষ্কৃতী। তবে, নিছক চোর ধরা নয়, আটক চোরকে শিয়ালদহ পর্যন্ত এনে রেল পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে মহিলা যাত্রীর খোয়া যাওয়া জিনিস ফেরানোর ব্যবস্থাও করলেন বিকানের-শিয়ালদহ দুরন্ত এক্সপ্রেসের মানস অধিকারী নামে ওই চিফ ইনস্পেক্টর অব টিকেটস।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নির্ধারিত সময়েই নয়াদিল্লি স্টেশনে এসেছিল বিকানের-শিয়ালদহ দুরন্ত এক্সপ্রেস। ওই ট্রেনের বাতানুকূল কামরায় বিকানের থেকে শিয়ালদহ ফিরছিলেন বছর পঁয়তাল্লিশের স্বর্ণলতা জোশী। ট্রেন ছাড়ার ঠিক আগের মুহূর্তে আচমকাই এক যুবক তাঁর মোবাইল, চার্জার এবং গলার হার ছিনিয়ে নিয়ে দরজার দিকে ছুট লাগায়। সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে স্টেশনের ভিড়ে মিশে যেতে সমস্যা হবে না ভেবেই ওই যুবক দ্রুত পালানোর ছক কষেছিল বলে অনুমান ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের। কিন্তু, মহিলার চিৎকারে ওই ট্রেনের টিকিট পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক এবং কোচ অ্যাটেনডেন্ট যুবককে ধরে ফেলেন।
বছর তেইশ-চব্বিশের ওই যুবককে তাঁরা নয়াদিল্লি স্টেশনে কর্তব্যরত আর পি এফ কর্মীদের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টাও করেন। কিন্তু, সেই চেষ্টা ফলপ্রসূ না হওয়ায় ওই দুষ্কৃতীকে ট্রেনে রীতিমতো পাহারা দিয়ে শিয়ালদহ পর্যন্ত নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন ট্রেনের মুখ্য টিকিট পরীক্ষক তথা ট্রেন ম্যানেজার।
গত শুক্রবার দুপুরে ট্রেনটি বিকানের থেকে নির্ধারিত সময়ে ছাড়লেও তাতে সেখান থেকে দীনদয়াল উপাধ্যায় জংশন (মোগলসরাই) স্টেশন পর্যন্ত কোনও রক্ষী ছিলেন না বলে অভিযোগ। ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ওই ট্রেনের নয়াদিল্লি এবং শিয়ালদহ কন্ট্রোল রুমে জানানো হয়। নয়াদিল্লি স্টেশনে টহলরত আর পি এফ কর্মীরা অভিযুক্ত দুষ্কৃতীর দায়িত্ব নিতে চাননি বলে অভিযোগ। একই পরিস্থিতিতে পড়তে হয় দীনদয়াল উপাধ্যায় স্টেশনেও।
শনিবার দুপুরে ট্রেনটি শিয়ালদহে পৌঁছলে অভিযুক্ত যুবককে রেল পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে ওই মহিলা যাত্রীকে তাঁর জিনিস ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন কর্মীরা। ওই যাত্রী ছাড়াও শিয়ালদহের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার যশরাম মীনা টিকিট পরীক্ষকের তৎপরতা এবং সাহসের প্রশংসা করেছেন। রেলকর্মীদের সকলকেই এ ভাবে এগিয়ে এসে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তবে, প্রথম সারির একটি ট্রেনে দীর্ঘ সময় রক্ষী না থাকায় যাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভুক্তভোগী যাত্রীও একই সমস্যার কথা জানিয়েছেন।