রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: আগামী ২০ এপ্রিল বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ। এবারের আয়োজক দলের শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর সংগঠন। ওই দিনের সমাবেশে সিপিএমের বক্তা তালিকায় শেষমেশ মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে রাখতে চলেছে বঙ্গ সিপিএম। দলের যুবনেত্রী ও সদ্য পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হওয়ায় মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে ব্রিগেডের বক্তা তালিকায় নাম দেওয়া হয়নি। কিন্তু ব্রিগেড ভরাতে ও দলের নিচুতলার কর্মীদের দাবিকে সামনে রেখে তরুণ মুখ মীনাক্ষীকে ব্রিগেডের মঞ্চে রাখতে চলেছে সিপিএম। তাঁকে বক্তা তালিকায় না রাখলে পক্ককেশ নেতাদের ভাষণ শুনতে গ্রীষ্মের দাবদাহ উপেক্ষা করে ব্রিগেডে ভিড় হবে না, তা বিলক্ষণ জানেন আলিমুদ্দিনের কর্তারা। তাই দলের তরুণ মুখ মীনাক্ষীকে আনা হচ্ছে বক্তা তালিকায়।
বৈশাখ মাসের প্রবল গরমে ব্রিগেডের মাঠ কতটা ভরবে তা নিয়ে সিপিএমের মধ্যে আশঙ্কা তো রয়েছেই। তাই গত শুক্রবার মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করিয়ে মাঠ ভরানোর ডাক দেওয়া হয়েছে। বিগত কয়েক দশক ধরে সিপিএমের ব্রিগেডে উল্লেখযোগ্য ভিড় হয়েছে। বাংলা থেকে পার্টি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরেও ভিড় হয়েছে ব্রিগেডের মাঠে। গত বছর যুবনেত্রী মীনাক্ষীর আয়োজনে ‘ইনসাফ যাত্রা’ সমাবেশেও ভিড় হয়েছিল। কিন্তু তার প্রতিফলন ভোটবাক্সে পড়েনি বিন্দুমাত্র। সেখানে শূন্য থেকে গিয়েছে লাল পার্টির।
আর এবার সরাসরি সিপিএমের ডাকে ব্রিগেড হচ্ছে না। তার উপর সিপিএমের সংগঠনিক অবস্থাও তথৈবচ। ২০ এপ্রিল ব্রিগেডের সমাবেশের বক্তা তালিকায় রয়েছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ছাড়াও অনাদি সাহু, নিরাপদ সর্দার, বন্যা টুডু, অমল হালদার ও সুখরঞ্জন দে প্রমুখ পার্টির শ্রমিক, কৃষক ও খেতমজুর সংগঠনের নেতারা। কিন্তু জনসমর্থন হারানো সিপিএমের এই পক্ককেশ বক্তাদের (সেলিম ছাড়া) ভাষণ শুনতে ভিড় হওয়া মুশকিল। তাই বক্তা তালিকায় নতুন নাম হিসাবে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে রাখতে বাধ্য হচ্ছে আলিমুদ্দিন। কারণ, যে পাঁচজন নেতা বক্তা তালিকায় রয়েছেন সেই পাঁচজনই প্রথম ব্রিগেডে বক্তব্য রাখবেন।
সারা ভারত কৃষক সভা, সারা ভারত খেত মজুর ইউনিয়ন, সিআইটিইউ ও পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতির ডাকে এবার ব্রিগেড সমাবেশ। তাদেরই নেতৃত্ব নিরাপদ সর্দার, বন্যা টুডু, অমল হালদার, অনাদি সাহু ও সুখরঞ্জন দে এবার ব্রিগেডে বক্তা। জমি থেকে কৃষক আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলনকে ভিত্তি করেই এ রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল সিপিএম। পার্টি ও নেতারা এসব শ্রেণি থেকে বর্তমানে অনেক দূরে সরে গিয়েছে। আবার সেই পুরনো উৎসে ফিরতে চাইছে সিপিএম। মন পেতে চাইছে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া সেই কৃষক, শ্রমিক, খেতমজুরদের।