ধীরে ধীরে পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায়। সোমবার সকাল পর্যন্ত সামশেরগঞ্জ ও সুতি থানা এলাকায় নতুন করে কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি পুলিশের। মূলত জেলার সামশেরগঞ্জ ব্লক, ধুলিয়ান পুরসভা এলাকার বিস্তীর্ণ অংশ এই অশান্তির জেরে বিপর্যস্ত। জানা গিয়েছে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই সমস্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিশেষ একটি কিট দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে রান্না করার জিনিসপত্র থেকে খাদ্যসামগ্রী থাকছে। মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) দীননারায়ণ ঘোষ ‘এই সময় অনলাইন’-কে বলেন, ‘উপদ্রুত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’
আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন অংশে ইন্টরনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হচ্ছে।
সোমবার সকালেও সামশেরগঞ্জ, সুতি-সহ বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশ। তবে, নতুন করে গ্রেপ্তারির সংখ্যা বাড়েনি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এক আধিকারিক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১৭ কোম্পানি মতো কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। তবে গ্রেপ্তারের সংখ্যা নতুন করে বাড়েনি। এলাকা শান্ত করতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে।’ জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এক আধিকারিক জানান, রবিবার সকাল পর্যন্ত সামশেরগঞ্জ ও সুতি থানা এলাকায় ১৮০ জন গ্রেপ্তার হয়েছিল। রবিবার রাতে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে সামশেরগঞ্জ থানা এলাকা থেকে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করার ফলে এখনও পর্যন্ত মোট গ্রেপ্তারির সংখ্যা বেড়ে হলো ১৯২ জন।
সুতি, ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জের একাধিক স্পর্শকাতর এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে আতঙ্কিত এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলছেন। বিএসএফের এক কর্তা জানান, রাজ্য সরকার যত দিন চাইবে, তাঁরা তত দিন থাকবেন। অশান্তি রুখতে রবিবার থেকে লালগোলা, নবগ্রাম, বহরমপুরের একাংশ এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে।
রবিবারই অবশ্য রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার জানিয়েছিলেন, মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করেছেন ডিজিপি নিজে। কলকাতা থেকে ২৩ জন দক্ষ অফিসারকে মুর্শিদাবাদে পাঠানো হয়েছে। কিছু এলাকাকে অতি স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বাড়তি নজরদারি রয়েছে। প্রসঙ্গত, ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকাল থেকে ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জ এলাকায় অশান্তি ছড়ায়। শনিবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। শুক্রবার থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।