এই সময়, পানিহাটি: গঙ্গায় স্নান করতে নেমে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হলো এক যুবকের। ভাইকে বাঁচাতে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হলেন দাদা। মর্মান্তিক ঘটনায় শোকের ছায়া পরিবারে। শনিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পানিহাটি ত্রাণনাথবাবু গঙ্গার ঘাটে। ছোট ভাই অনুরাগ পালের (২৭) দেহ উদ্ধার হলেও তাঁর দাদা আদিত্য পালের রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে তল্লাশি জারি রেখেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা অনুরাগ ও তাঁর দাদা পরিবার নিয়ে খড়দহের মোড়লপাড়ায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত দুটো নাগাদ চার যুবক ও এক তরুণী পানিহাটি ত্রাণনাথবাবু গঙ্গার ঘাটে আসেন। পুলিশের অনুমান, প্রত্যেকেই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। অভিযোগ, খড়দহের দিক থেকে এসে গঙ্গার ঘাটে বসে নেশাভাঙ করেন তাঁরা। এর পর ওই রাতে গঙ্গায় স্নান করতে নামেন সকলে। স্নান করার পর আদিত্য–সহ বাকিরা পাড়ে উঠে আসার সময় অনুরাগকে তলিয়ে যেতে দেখেন।
ভাইকে তলিয়ে যেতে দেখে গঙ্গায় ঝাঁপ দেন দাদা আদিত্য। কিন্তু ভাইকে উদ্ধারের পরিবর্তে তিনিও তলিয়ে যান। দুই ভাইকে একসঙ্গে তলিয়ে যেতে দেখে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেন সঙ্গীরা। তাঁদের চিৎকারে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। ততক্ষণে ডুবে গিয়েছেন দুই ভাই। বাসিন্দারা খবর দেন খড়দহ থানায়। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। রাতে ডুবুরি নামানো সম্ভব হয়নি। সোমবার সকাল হতেই দুই ভাইয়ের খোঁজে গঙ্গায় নামে ডুবুরি। নামানো হয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও।
গঙ্গার ঘাটের কাছ থেকে অনুরাগের দেহ উদ্ধার হলেও আদিত্যর এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। দুই ভাইয়ের একজনের মৃত্যু এবং আর একজনের নিখোঁজ হওয়ার খবরে পাল পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পুলিশ ঘটনার সময় উপস্থিত দুই ভাইয়ের বান্ধবী ও বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। ঘটনায় ঘাট সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা গঙ্গার ঘাটে পুলিশের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ঘাটের পাশেই রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন ত্রাণনাথ কালী মন্দির। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাত হলেই গঙ্গার ঘাটে বহিরাগতদের আনাগোনা বাড়ে৷ অবাধে প্রকাশ্যেই চলে নেশাভাঙও। তাতে বাসিন্দারা অতিষ্ঠ শুধু নন, আতঙ্কিতও। মন্দিরের বিগ্রহে গয়না থাকায় আতঙ্কিত মন্দির কর্তৃপক্ষও। তাদের দাবি, এলাকায় পুলিশ নজরদারি বাড়াক।