• পড়ুয়াহীন দুই স্কুলে গল্পে দিন কাটাচ্ছেন ৩০ শিক্ষক
    এই সময় | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়, সোদপুর: দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে এক ধাক্কায় চাকরি বাতিল হয়েছে হাজার হাজার স্কুল শিক্ষকের। যার ফলে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সরকারি স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাতে সমস্যায় পড়েছে পড়ুয়ারা৷ আগামী দিনে কী ভাবে সিলেবাস শেষ হবে, কারা ক্লাস করাবেন তা নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা যখন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তখন উল্টো ছবি সোদপুরের দু’টি সরকারি স্কুলে।

    একটিতে পড়ুয়ার সংখ্যা শূন্য এবং আর একটিতে একেবারে নগণ্য। অথচ শিক্ষক শিক্ষিকায় কমতি নেই। রোজই স্কুলে হাজির হয়ে সই করছেন হাজিরা খাতায়। নির্দিষ্ট সময় পেরনোর পর আবার যে যার মতো বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। বাসিন্দাদের প্রশ্ন, যেখানে পড়ুয়াই নেই সেখানে এতজন শিক্ষক-শিক্ষিকার কী দরকার? সরকারি টাকা অপচয় না করে যেসব স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকার প্রয়োজন রয়েছে সেখানে কেন তাদের পাঠানো হবে না?

    পাশাপাশি দু’টি স্কুল। ঘোলা ভুবনেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয় এবং সোদপুর সুশীলকৃষ্ণ শিক্ষায়তন ফর বয়েজ়। ভুবনেশ্বরী স্কুলে ছাত্রীর সংখ্যা শূন্য! অথচ এই স্কুলে শিক্ষিকার সংখ্যা ১৯ জন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, যেখানে পড়ুয়াই নেই সেখানে শিক্ষিকারা কাদের পড়ান? যদিও তা নিয়ে শিক্ষিকাদের কেউ মুখ খুলতে চাননি। স্থানীয়দের বক্তব্য, প্রায় সব শিক্ষিকাই প্রতিদিন স্কুলে আসেন। টিচার্স রুমে নিজেদের মধ্যে গল্পগুজব করে, মোবাইল ঘেঁটে স্কুল টাইম শেষে যে যার মতন রওনা দিচ্ছেন বাড়িতে।

    একই অবস্থা সোদপুর সুশীলকৃষ্ণ শিক্ষায়তনেও। কমতে কমতে বর্তমানে এই স্কুলে ছাত্র সংখ্যা ৫ জনে এসে ঠেকেছে। অথচ এখানে শিক্ষক রয়েছেন ১১ জন! হাতে গোনা যে ক’জন ছাত্র রয়েছে তারাও ঠিকমতো স্কুলে আসে না। সেখানেও গিয়ে দেখা গেল খোশ মেজাজে নিজেদের মধ্যে গল্পে মত্ত শিক্ষক শিক্ষিকারা৷ স্কুলে ছাত্রছাত্রী না আসার সুযোগে স্কুলের মাঠে এলাকার কচিকাঁচারা ক্রিকেট খেলায় ব্যস্ত।

    যদিও স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত বিশ্বাস কোনও কথাই বলতে চাননি। বিষয়টি নিয়ে বাসিন্দাদের অভিযোগ থাকলেও রিপোর্ট প্রতিনিয়ত ডিআই অফিসে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন দুই স্কুল কর্তৃপক্ষ। যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ, দিনের পর দিন এ ভাবেই চলছে। অবিলম্বে সরকারের বিষয়টির উপর নজর দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলেন, ‘এ রকম হয়ে থাকলে সরকারের টাকা অপচয় তো হচ্ছেই। খোঁজ নিয়ে বলতে পারব।’ ব্যারাকপুরের মহকুমা শাসক সৌরভ বারিক বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। যাতে শিক্ষা দপ্তরের নজরে বিষয়টি আসে তা দেখা হচ্ছে।’

  • Link to this news (এই সময়)