আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর যুগেও ভাটা নেই চড়কে, হাজার বছরের পরম্পরা আজও অম্লান...
আজকাল | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
শান্তনু সরকার: চড়ক পুজো বাংলার ঐতিহ্যবাহী একটি লোক উৎসব। যা প্রধানত গ্রামীণ বাংলায় আয়োজন করা হয়। এই প্রথা হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে শিব ও শক্তির আরাধনার সঙ্গে জড়িত এবং বাংলা বছরের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তির দিনে উদযাপিত হয়। উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু হলো 'চড়ক উৎসব' বা গ্রাম বাংলার 'গাজন' নামে পরিচিত আচার-অনুষ্ঠান। যেখানে ভক্তরা শারীরিক কষ্ট সহ্য করে দেবতার প্রতি তাঁদের ভক্তি প্রকাশ করেন। গাজন উৎসবে অংশগ্রহণকারী ভক্ত বা সন্ন্যাসীরা বিশেষ পোশাক পরেন এবং কঠোর নিয়ম পালন করেন। একটি লম্বা কাঠের খুঁটির চারপাশে দড়ি বেঁধে ভক্তরা ঘুরতে থাকেন। যা দেখতে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এটি তাঁদের ভক্তি ও সাহসের প্রতীক।
কিছু ভক্ত আগুনের উপর দিয়ে হাঁটা, শরীরে সূঁচ ফোটানো বা অন্যান্য কঠিন আচার পালন করেন। গ্রামে গ্রামে গাজনের গান, নৃত্য ও লোকনাট্য পরিবেশন করা হয়। এগুলোতে শিব-পার্বতীর কাহিনী বা স্থানীয় কিংবদন্তি তুলে ধরা হয়। উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন গ্রামে মেলার আয়োজন হয়। যেখানে স্থানীয় হস্তশিল্প, খাবার ও খেলনার দোকান সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। চড়ক পুজো কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়। এটি বাঙালি গ্রামীণ সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
পাশাপাশি এই উৎসব ঐক্য, ভক্তি ও সাহসের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে, আধুনিক সময়ে শারীরিক ঝুঁকির কারণে এই উৎসবের কিছু আচার নিয়ে বিতর্কও হয়েছে । তবু আজ এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর যুগেও সংস্কৃতি ও পরম্পরা চলছে একই আঙ্গিকে।