• শিলিগুড়ির জ্যোতিনগরে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তেজনা, ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী
    আজ তক | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • Siliguri Jyotinagar Clash 2025: শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জ্যোতিনগর এলাকায় সোমবার ভোরে হঠাৎই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ভাঙচুর করা হয় একাধিক বাড়ি ও টোটো, চলে ব্যাপক ইটবৃষ্টি। ঘটনায় আহত হন উভয় গোষ্ঠীর একাধিক ব্যক্তি।
    ঘটনার পরপরই এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছান শিলিগুড়ি থানার বিশাল পুলিশবাহিনী।

    ঘটনাস্থলে পৌঁছন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর (Siliguri Police Commissioner C Sudhakar), ডেপুটি কমিশনার (সদর) তন্ময় সরকার, ও অন্যান্য পদস্থ পুলিশকর্তারা। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। শহরের স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে ইতিমধ্যেই সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, “শহর শান্ত রয়েছে। কেউ যেন কোনও গুজবে কান না দেন।” এই সংঘর্ষের ঘটনার প্রভাব পড়েছে রাজ্যব্যাপী পুলিশি মোতায়েনেও।

    ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর, সামসেরগঞ্জ, সুতি, ধুলিয়ান সহ আরও বেশ কয়েকটি এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী পাঠানো হচ্ছিল। সেই সূত্রে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে দক্ষ ২৩ জন পুলিশকর্তাকে জরুরি তলব করে নবান্ন। তালিকায় ছিলেন শিলিগুড়ির এএসিপি রবিন থাপা। তিনি মুর্শিদাবাদ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু জ্যোতিনগরের গোলমালের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় তাঁকে রিলিজ অর্ডার দেওয়া হয়নি। পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে তাঁকে জ্যোতিনগর অঞ্চলের নিরাপত্তার দায়িত্বে রাখা হয়।

    শিলিগুড়ির ডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বচাঁদ ঠাকুর সংবাদমাধ্যমকে জানান, "রবিন থাপাকে এখানে প্রয়োজন ছিল। তাই তাঁকে রাখা হয়েছে।" তাঁর বদলে এসিপি ট্রাফিক রথীন মজুমদারকে মুর্শিদাবাদে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদে এখনও পরিস্থিতি উত্তপ্ত। ইতিমধ্যেই সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। গত কয়েকদিনে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত। সেই আবহেই শিলিগুড়িতে উত্তেজনাকে হালকা ভাবে নিচ্ছে না পুলিশ।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাতে জ্যোতিনগরে চড়ক পুজোর আয়োজনকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু হলেও, পরে তা হিংসাত্মক রূপ নেয়। উভয় পক্ষের মধ্যে পাথর ছোড়াছুড়ি, লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষ এবং সম্পত্তি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এই সংঘর্ষে বেশ কয়েকটি বাড়ির জানালা, দরজা এবং অন্যান্য সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫-৬ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

    এলাকার বাসিন্দাদের মতে, চড়ক পুজোর আয়োজন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন যে, পুজোর স্থান এবং আয়োজনের দায়িত্ব নিয়ে মতবিরোধ এই সংঘর্ষের মূল কারণ। তবে, পুলিশ এখনও ঘটনার সঠিক কারণ নিশ্চিত করেনি। সংঘর্ষের পর এলাকায় পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত রাখতে বিশেষ নজরদারি চলছে।

    স্থানীয় কাউন্সিলর জানিয়েছেন, “এই ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমঝোতার চেষ্টা করছি। এলাকার শান্তি ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।” তবে, সংঘর্ষের জেরে জ্যোতিনগরে এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে। বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন, এবং অনেকে আশঙ্কা করছেন যে, পরিস্থিতি আবার অশান্ত হতে পারে।

     
  • Link to this news (আজ তক)