সদ্য সমাপ্ত হওয়া পার্টি কংগ্রেসে তাঁকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে। তা নিয়ে অনেকের মধ্যে মতপার্থক্য ছিল। এখনও মতপার্থক্য রয়েছে দলের অন্দরে। আর তার মধ্যেই এবার সিপিএমের ব্রিগেডের বক্তা তালিকাতেও উঠে এল মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নাম। আগামী ২০ এপ্রিল ব্রিগেড সমাবেশ। যার আয়োজক দলের শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর সংগঠন। সিপিএমের বক্তা তালিকায় শেষ মুহূর্তে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে এল বঙ্গ–সিপিএম। প্রথমে ব্রিগেডের বক্তা তালিকায় তাঁর নাম দেওয়া হয়নি। তবে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড ভরাতে এবং দলের নিচুতলার কর্মীদের দাবিতে মীনাক্ষীকে মঞ্চে রাখছে সিপিএম। মীনাক্ষীকে বক্তা তালিকায় না রাখলে বৃদ্ধ নেতাদের ভাষণ শুনতে গরমের দাবদাহকে উপেক্ষা করে ভিড় জমবে না সেটা জানেন আলিমুদ্দিনের নেতারা। তাই মীনাক্ষীকে আনা হচ্ছে বক্তা তালিকায়।
এদিকে সিপিএমের ব্রিগেডের মতো বড় মঞ্চে সাধারণত প্রবীণ নেতারা বক্তব্য রাখেন। এবারও শুরুতে দলের পক্ষ থেকে প্রকাশিত বক্তাদের তালিকায় নাম ছিল না নতুন প্রজন্মের মুখ মীনাক্ষীর। পরে বক্তাদের তালিকায় যুক্ত করা হয় মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নাম। যা নিয়ে নানা মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এমনকী তা নিয়ে চর্চাও শুরু হয়েছে দলের অন্দরে। শুক্রবার মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করিয়ে মাঠ ভরাতে ডাক দেওয়া হয়েছে। বিরোধী আসনে বসার পর থেকে সিপিএমের ব্রিগেডে ভিড় হয়েছে ভালই। ২০২৪ সালো যুবনেত্রী মীনাক্ষীর আয়োজনে ‘ইনসাফ যাত্রা’ সমাবেশেও ভাল ভিড় হয়েছিল। কিন্তু শূন্যতা কাটেনি।
অন্যদিকে বঙ্গ–সিপিএম নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন বক্তা তালিকায় শুধু প্রবীণদের রাখলে চলবে না। নতুন প্রজন্মের নেতা–নেত্রীদেরও রাখতে হবে। তাই শুরুতে বক্তা তালিকায় নাম না থাকলেও পরে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে চাপে পড়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সিপিএমের এক নেতা বলেন, ‘মীনাক্ষীর বক্তব্যে একটা আলাদা ঝাঁঝ আছে। সেটা অস্বীকার করার জায়গা নেই। যেটা জনতাকে টানে। নীচুতলা থেকে বহু কর্মীই খোঁজ নিচ্ছিলেন, ব্রিগেড সমাবেশের বক্তা তালিকায় মীনাক্ষীর নাম রাখা হয়েছে কিনা। তাই ওইসব কর্মীদের আবেগকে গুরুত্ব দিয়ে এমন সিদ্ধান্ত শেষ মুহূর্তে নেওয়া হয়েছে।’
এছাড়া আগামী ২০ এপ্রিল ব্রিগেডের সমাবেশের বক্তা তালিকায় রয়েছেন—সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, অনাদি সাহু, নিরাপদ সর্দার, বন্যা টুডু, অমল হালদার এবং সুখরঞ্জন দে–সহ অন্যান্য সংগঠনের নেতারা। সেই তালিকায় এবার ঢুকে পড়লেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। এবার গণসংগঠনের নামে ব্রিগেড সমাবেশ ডাকা হয়েছে। যার মূল ভিত্তি সিপিএম। সঙ্গে অন্যান্য বাম দলের নেতারা থাকবেন। একদা কেশপুর, গড়বেতা, গোঘাট, আরামবাগ–সহ নানা এলাকায় ছিল সিপিএমের ব্যাপক দাপট। ২০১১ সালে পালাবদলের পর থেকে ছবিটা বদলে গিয়েছে। সিপিএম–সহ বামেরা ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হয়ে বিধানসভায় শূন্য হয়েছে। লোকসভাতেও তাই। রাজ্যসভায় সেটা হতে চলেছে।