চাকরিটা চলে গেল ওঁদের জন্যই: ‘অযোগ্য’দের দিকে আঙুল তুলে দিল্লির পথে ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা
আনন্দবাজার | ১৪ এপ্রিল ২০২৫
ধর্মতলায় ওয়াই চ্যানেল থেকে বাসে চেপে সোমবার দুপুরে দিল্লির পথে রওনা হলেন প্রায় ৬০ জন চাকরিহারা। বুধবার দিল্লির যন্তরমন্তরে চাকরি হারানোর প্রতিবাদে ধর্না দেবেন তাঁরা। সোমবার রওনা হওয়ার আগে ওই চাকরিহারারা নিজেদের ‘যোগ্য’ জানিয়ে আঙুল তুললেন ‘অযোগ্য’দের দিকে। ঘটনাচক্রে, সোমবারই কলকাতার রাস্তায় মিছিল করেন হাই কোর্টের রায়ে ‘অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত চাকরিহারারা। দিল্লিগামী বাসে ওঠার আগে তাঁদের দিকেই আঙুল তুললেন চাকরিহারাদের একাংশ।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন রাজ্যের সরকার পোষিত এবং ভারপ্রাপ্ত স্কুলগুলির ২৫,৭৩৫ জন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। তাঁরা সকলেই ২০১৬ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যোগ দিয়েছিলেন। প্রতিবাদে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে অবস্থান বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন চাকরিহারাদের একটা বড় অংশ। বুধবার দিল্লিতে তাঁদের কর্মসূচি রয়েছে। সেখানে অবস্থান বিক্ষোভ করার কথা ৭০ জনের। সেই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য রবিবার ট্রেনে চেপে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন সাত-আট জন চাকরিহারা। মঙ্গলবার আরও সাত-আট জনের ট্রেনে চেপে দিল্লি রওনা দেওয়ার কথা। তার মাঝে সোমবার ধর্মতলা থেকে ছাড়ল চাকরিহারাদের বাস। বাসে আসনসংখ্যা ৬০। চাকরিহারাদের নিয়ে ভর্তি বাসই রওনা হল দিল্লির পথে। তাঁদের তরফে জানানো হয়েছে, টাকাপয়সার কথা মাথায় রেখেই এই ব্যবস্থা হয়েছে। তাঁরা যখন দিল্লির উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন, তখন কলকাতার রাস্তায় মিছিল করছেন ‘অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত চাকরিহারারা। সিবিআই তাঁদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ দিয়েছিল। তাঁর ভিত্তিতে ‘অযোগ্য’ বলে জানায় হাই কোর্ট। সেই ‘অযোগ্য’-দের কটাক্ষ করে আন্দোলনকারীদের একাংশ জানান, যাঁরা রাজপথে মিছিল করে নিজেদের ‘যোগ্য’ বলে দাবি করছেন, তাঁদের কাছে কি সেই প্রমাণ রয়েছে?
চাকরিহারাদের সংগঠন ‘যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী ২০১৬ ঐক্যমঞ্চ’-এর নেতা চিন্ময় মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের কোনও বিরোধ নেই তাঁদের সঙ্গে। আমাদের চাকরিটা চলে গেল তাঁদের এবং তাঁদের যাঁরা এই বেনিয়মের পথে চাকরি দিয়েছেন, সেই মানুষগুলির জন্য।’’ আর এক চাকরিহারা মীনাক্ষী হালদার বলেন, ‘‘সিবিআই যে তদন্ত করেছে, তাতে ১৭ রকমের দুর্নীতি হয়েছে বলে তারা খুঁজে পেয়েছে। কারা ‘অযোগ্য’, সেটাও তারা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। আমরা তাঁদের ‘অযোগ্য’ বলছি না। এটা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে।’’