• মুছে যাচ্ছে চৈতের পন্তা-তিতাজল-বিষ মাটির রীতি! আধুনিকতার গ্রাসে পয়লা বৈশাখের শিকড়
    প্রতিদিন | ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: আধুনিকতা গিলে খেয়েছে ‘চৈতের পন্তা’ বৈশাখে খাওয়ার রীতি। উত্তরের রাজবংশী সমাজ বছরের শুরুতে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি ‘তিতা জল’ পানের প্রথাও প্রায় ছেড়েছে। বেমালুম ভুলেছে ‘কান্দির জল’ প্রস্তুতের কথা। সংক্রান্তিতে প্রত্যন্ত গ্রাম ছাড়া দেখা মেলেনি তুলসীতলায় ঝোরা বাধা। গ্রামীণ নতুন প্রজন্ম নতুন পোশাকে হইচই, রেস্তোরাঁয় বসে ভুড়িভোজেই নববর্ষ পালনে অভ্যস্ত এখন।

    কয়েক দশক আগেও উত্তরের তিস্তা, তোরসা, মানসাই পাড়ের নববর্ষ উৎসব বলতে আর দশটা উৎসবের মতো নিছকই হই-হুল্লোড় ছিল না। সেখানে জড়িয়ে ছিল কৃষি বন্দনার আকুতি। সমাজের প্রতিটি মানুষকে বছরভর নিরোগ রাখার চিন্তা। প্রকৃতি প্রেম ও সর্বপ্রাণবাদের ভাবনা। নববর্ষে নতুন সূর্যোদয়ের সঙ্গে শুরু হয়ে যেত একের পর এক রীতি পালনের পর্ব। দিনের শুরু হতো চালভাজা, পাটবীজ, নিমপাতা-সহ বিভিন্ন ভেষজ গুণসম্পন্ন সামগ্রী দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি ‘তিতা জল’ পান করে। এরপর থাকত ‘চৈতের পন্তা বৈশাখে খাওয়া’-র রীতি পালন। রাজবংশী সমাজে চৈত্র সংক্রান্তি পরিচিত ‘বিষুয়া সংক্রান্তি’ নামে। সংক্রান্তির রাতে রান্না করা ভাতে জল ঢেলে রেখে পরদিন পান্তা তৈরি করে খেয়ে নিতেন প্রত্যেকে। সেটাই ‘চৈতের পন্তা বৈশাখে খাওয়া’-র রীতি নামে পরিচিত।
  • Link to this news (প্রতিদিন)