• নিজেদের কোন্দলে চা বলয়ে ভোট কমেছে গেরুয়া শিবিরের
    বর্তমান | ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • ব্রতীন দাস, জলপাইগুড়ি: নিজেদের কোন্দলের জেরে ডুয়ার্সের চা বলয়ে ভোট কমেছে বিজেপির। বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি খোদ বিজেপির চা শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের (বিটিডব্লুইউ) সভাপতি যুগল ঝা’র। সাংগঠনিক দুর্বলতা স্বীকার করে নিয়ে তাঁর দাবি, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁরা সেভাবে চা বাগানে যেতে পারছেন না। এমনকী সেইঅর্থে কোনও কর্মসূচিও নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গত লোকসভা ভোটে চা বলয়ে বিজেপির ভোট ব্যাঙ্কে ধস নামার পর ঠিক হয়েছিল দলীয় নেতৃত্ব প্রতিটি চা বাগানে যাবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা হয়নি। ফলে সংগঠনের হাল নিয়ে যথেষ্টই উদ্বেগের সুর বিটিডব্লুইউ’র সভাপতির গলায়। তিনি বলেন, এটা ঠিক, জন বারলা ও আমার মধ্যে ঝামেলার জেরে চা বাগানে আমাদের ভোট অনেক কমেছে। সংগঠনের হাল খারাপ হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আমরা বাগানে ঠিকমতো যেতে পারছি না। চা শ্রমিকদের মধ্যে এসবের প্রভাব তো পড়বেই। যদিও তাঁর দাবি, বিধানসভা ভোটের আগে আমরা চা বলয়ে সংগঠন আবারও শক্তিশালী করতে পারব। 

    এদিকে, রাজ্যের উন্নয়ন প্রকল্পের জেরে চা বাগানে বিজেপির ভোট কমেছে বলে সরাসরি স্বীকার করে নিয়েছেন ফালাকাটার বিধায়ক তথা দলের উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক দীপক বর্মন। এদিন তিনি বলেন, এটা ঠিক, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে ডুয়ার্সের চা বলয়ে আমাদের ভোট অনেক কমেছে। আসলে রাজ্য সরকার চা শ্রমিকদের এক লক্ষ ২০ হাজার টাকায় বাড়ি দিয়েছে। ২৩৪ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে এই খাতে। এর একটা তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে চা শ্রমিকদের মধ্যে। যদিও তাঁর দাবি, চা শ্রমিকরা বিজেপির সঙ্গে ছিলেন। আগামী দিনেও থাকবেন।

    তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশচিক বরাইক বলেন, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলা মিলিয়ে চা বাগানে ৪৮৩টি বুথ রয়েছে। এর মধ্যে গত লোকসভায় আমরা ২৪৪টি বুথে এগিয়ে ছিলাম। মাদারিহাট বিধানসভা উপ নির্বাচনে চা বাগানের একশোটি বুথের মধ্যে ৮১টিতে এগিয়ে রয়েছি আমরা। আগামী বিধানসভায় চা বাগানে বিজেপিকে ফিনিশ করতে আমরা ২৩৯টি বুথে নজর রেখেছি। 

    তৃণমূল সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মসূচি ঠিকমতো মিলছে কি না, তা সরেজমিনে দেখতে নিয়মিত প্রত্যেক চা শ্রমিকের বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের নেতাদের। একইসঙ্গে বকেয়া পিএফ ইস্যুতে তৃণমূলের চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, প্রতিটি বাগানে তা বিধানসভা ভোট পর্যন্ত লাগাতার চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

    তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীরেন্দ্র বড়া বলেন, চা সুন্দরী প্রকল্পের বাড়ি, চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা তো আছেই। রাজ্যের উদ্যোগে চা শ্রমিকদের ছেলেমেয়েদের জন্য নিখরচায় স্কুলবাসের ব্যবস্থা করছে রাজ্য। প্রতিটি বাগানে ক্রেশ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র হচ্ছে। উন্নয়নেই আমরা চা শ্রমিকদের মন জয় করতে চাই।
  • Link to this news (বর্তমান)