নববর্ষে হাজার হাজার লাড্ডু সরবরাহ করে ক্লান্ত, তবুও তৃপ্তির হাসি কারিগরদের মুখে
বর্তমান | ১৫ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, মালদহ: আজ বাংলা নববর্ষ। হাজার হাজার লাড্ডু তৈরির ক্লান্তি কাটিয়ে খানিকটা নিশ্চিন্তে অনেক ময়রা পরিবার। গত এক সপ্তাহ ধরে মুঠো ভরে ভরে লাড্ডু তৈরি করতে ব্যস্ত ছিলেন কারিগররা। কিছুটা ফুরসত মিলেছে সোমবার বিকেল থেকে। তারই মাঝে নববর্ষে পরার জন্য কিছু নতুন জামাকাপড়ও কিনে ফেলেছেন পরিবারের সদস্যরা। ক্লান্তির সঙ্গে রয়েছে তৃপ্তিও। নিজেদের হাতে তৈরি লাড্ডু জেলার ও মালদহের বাইরের অসংখ্য মানুষের মুখে তুলে দেওয়ার তৃপ্তি।
লাড্ডুর কারিগররা জানিয়েছেন, নববর্ষে লাড্ডুর বিপুল চাহিদা থাকলেও তাঁদের ময়দানে নেমে পড়তে হয় চৈত্রের শেষ সপ্তাহ থেকেই। লাড্ডু তৈরির কাঁচামাল জোগাড় করার পাশাপাশি মিষ্টি বানানোর তোড়জোর শুরু হয়ে যায় রামনবমী থেকেই। বিভিন্ন মন্দির থেকে যেমন লাড্ডুর বরাত আসে, তেমনই লাড্ডু তৈরি করতে দেন ব্যবসায়ীরাও। মালদহের বাইরে থেকেও অর্ডার আসে। উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের রাজমহল থেকেও লাড্ডু তৈরির বরাত মিলেছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ফলে নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় থাকে না।
মালদহ শহরের দক্ষিণ বালুচর এলাকায় লাড্ডু তৈরির কারিগর গোপাল সাহা বললেন, একার হাতে এত লাড্ডু তৈরি সম্ভব হয় না। এবছর প্রায় ৪০ হাজার লাড্ডু তৈরির বরাত মিলেছিল বিভিন্ন জায়গা থেকে। কারিগরদের পরিবারের মহিলারাও হাত লাগিয়েছেন লাড্ডু তৈরিতে।
বেসন, চিনি, মৌরি, এলাচ, মগজবাটা ইত্যাদি উপকরণ কিনে লেগে পড়তে হয়েছে লাড্ডু বানাতে। প্রতি পিস লাড্ডুর দাম ছয় টাকা। প্রতি কেজি ২৪০ টাকা।
হাতের মুঠোয় নিখুঁত দক্ষতায় লাড্ডু পাকাতে পাকাতে সুজাতা রায়, ডলি রায়রা বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লাড্ডু তৈরি করা মুখের কথা নয়। একেক সময় হাত ব্যথা হয়ে যায়। খানিকটা জিরিয়ে নিয়ে ফের বসতে হয় লাড্ডু বানাতে। কারণ নববর্ষের আগের দিন সকাল থেকেই ক্রেতারা হাজির হয়ে যান।
তবে তৃপ্তিও রয়েছে। এক কারিগর বলেন, নিজেদের খুব একটা চেখে দেখা হয় না। কিন্তু লাড্ডু মুখে পুরে মানুষের তৃপ্তি দেখলে মনে আনন্দ তো হয়ই। নববর্ষের দিন মানুষের লাড্ডু খাওয়ার এই তৃপ্তিই আমাদের বড় উপহার।