• মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে শাহী ‘হস্তক্ষেপ’ চেয়ে চিঠি
    বর্তমান | ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী নেমে গিয়েছে আগেই। তারপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে ‘হস্তক্ষেপ’ করতে বলার আহ্বান জানালেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। নিজের কেন্দ্র ছেড়ে পড়শি জেলার জন্য ‘চিন্তিত’ জগন্নাথবাবুকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল কংগ্রেস। সরাসরি সাংসদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন শান্তিপুরের তৃণমূল বিধায়ক। আর তাতেই রানাঘাটের রাজনীতিতে বিস্তর জলঘোলা শুরু হয়েছে।

    রবিবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে লেখা নিজের একটি চিঠি পোস্ট করেন জগন্নাথ সরকার। তাতে সাংসদ বলেন, মুর্শিদাবাদে এই মুহূর্তে চূড়ান্ত অস্থিরতা চলছে। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড মাথাচাড়া দিয়েছে। যেখানে পরিকল্পিতভাবে ‘হিন্দু’ ধর্মাবলম্বী মানুষের উপর আক্রমণ চলছে। ফলস্বরূপ তিনজন মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। অশান্তির কারণে বহু মানুষ ঘরছাড়া। সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তাই সেই চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ। শুধু তাই নয়, ওই চিঠিতে জগন্নাথবাবু ব্যাখ্যা করেন, প্রশাসন এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় নীরব। একইভাবে হুগলি, হাওড়া, নদীয়ার মতো বিভিন্ন জায়গাতেও অশান্তির পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। আর এই সমগ্র পরিস্থিতির কারণে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন রানাঘাটের সাংসদ।

    হঠাৎ নিজের কেন্দ্র ছেড়ে পড়শি মুর্শিদাবাদ জেলার জন্য কেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠাচ্ছেন জগন্নাথ সরকার? প্রশ্ন তুলেছেন শান্তিপুরের তৃণমূল বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী। বিজেপি সাংসদকে তিনি রাজনৈতিক বাক্যবাণে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, রাজনীতির ঘোলাজলে মাছ ধরতে জগন্নাথ সরকার রানাঘাটে বসে মুর্শিদাবাদের জন্য চিঠি লিখছেন। তাহলে তিনি কেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার জন্য একটিও চিঠি লিখছেন না? সেখানেও তো পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নামাতে হয়েছে। জগন্নাথবাবুর কথায় পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল দায়ী। তাহলে, ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারও তো ব্যর্থ। সেটা বিজেপি সাংসদ স্বীকার করে দেখাক, পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। 

    তিনি আরও বলেন, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মুর্শিদাবাদে আগেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নেমে গিয়েছে। খোদ রাজ্য পুলিসের ডিজি রাজীব কুমার ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। রাজ্য পুলিসের একাধিক শীর্ষ পদাধিকারী অশান্তি দমনে সক্রিয়। সব কিছুর পরে কী উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি? রাজ্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ছোট করতেই জগন্নাথবাবু রাজনীতির ঘোলাজলে মাছ ধরছেন। আমি সকলের কাছে আর্জি জানাব, পরিস্থিতি নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেন না। একটি মানুষের মৃত্যুও দুঃখের। রাজ্য প্রশাসন ধর্মনিরপেক্ষভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছেন। কোনও রটনায় কান না দিয়ে সম্প্রীতি বজায় রেখে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সমস্ত রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য সরকার।
  • Link to this news (বর্তমান)