ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্ক কৃত্রিমভাবে ৬টি রুপালি তিতির ও চারটি লাল জঙ্গল পাখির জন্ম
বর্তমান | ১৫ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্ৰাম জুলজিক্যাল পার্কে ছয়টি রুপালি তিতির ও চারটি লাল জঙ্গল পাখির জন্ম হয়েছে। উত্তরবঙ্গে পাহাড়ি এলাকায় রুপালি তিতির পাখির দেখা মেলে। বনমোরগের আদি প্রজাতি লাল জঙ্গল পাখি গভীর জঙ্গলে থাকে। কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করে এই দু’টি প্রজাতির ১০টি পাখির ছানার জন্ম হয়েছে। এই সাফল্যে ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের কর্মীরা উচ্ছ্বসিত।
ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, রুপালি তিতির ও লাল জঙ্গল পাখির ডিম ফুটে শাবক জন্মেছে। দীর্ঘ চেষ্টার পর এই সাফল্য মিলেছে। ঝাড়গ্রামের জুলজিক্যাল পার্কে কৃত্রিম পরিবেশে নানা প্রজাতির পাখির জন্ম দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে। এই এলাকার উষ্ণ তাপমাত্রা ও হঠাৎ বৃষ্টির কারণে একাজে সমস্যা হচ্ছিল। অবশেষে আমরা এই সাফল্য পেলাম।
ডিএফও জানান, পৃথিবীর সুন্দরতম পাখিদের অন্যতম রুপালি তিতির। উড়ন্ত রুপালি তিতিরের ছবি ক্যামেরাবন্দি করতে পাখিপ্রেমীরা পাহাড়ে ঘুরে বেড়ান। দক্ষিণবঙ্গে এই পাখি বেশি দেখা যায় না। আবার লাল জঙ্গল পাখির বৈশিষ্ট্য হল, এরা ধুলোর মধ্যে থাকতে পছন্দ করে। কারণ ধুলো পাখির পালকের তেল শুষে নেয়। শীতের শেষে ও বসন্তে লাল জঙ্গল পাখি প্রজনন করে। কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করে এই দু’টি প্রজাতির পাখির ছানার জন্ম সম্ভব হয়েছে। তাই অন্য প্রজাতির পাখিদের ক্ষেত্রেও এটা সম্ভব হবে বলে জুলজিক্যাল পার্কের আধিকারিকরা মনে করছেন।
বনবিভাগের এক কর্তা বলেন, জুলজিক্যাল পার্কে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে নানা পশু ও পাখির জন্ম দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ময়ূর, পাহাড়ি রুপালি তিতির, লাল জঙ্গল পাখির মতো বেশ কিছু পাখির প্রজননে আমরা বারবার ব্যর্থতার মুখ দেখছিলাম। এসব পাখির ডিম ফুটে ছানা জন্মানোর জন্য স্থায়ী উষ্ণ বা শীতল পরিবেশ দরকার। ঝাড়গ্রামের আবহাওয়া মূলত উষ্ণ। তবে আর্দ্রতার হেরফের ঘটে। হঠাৎ বৃষ্টির কারণে আবহাওয়ার দ্রুত বদল ঘটে যায়। সেক্ষেত্রে ডিম ফুটে ছানা জন্মানোর সম্ভাবনা কমে যায়। বহুদিন ধরেই কৃত্রিম প্রজননের জন্য পরীক্ষানিরীক্ষা চলছিল। এতদিনে তাতে সাফল্য পাওয়া সম্ভব হয়েছে।
ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের প্রাক্তন কর্তা সমীর মজুমদার বলেন, আমি যখন কর্মরত ছিলাম, তখন থেকে জুলজিক্যাল পার্কে কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করে নানা প্রজাতির পাখির জন্ম দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়। আবহাওয়াগত কারণ ও সঠিক পদ্ধতির ব্যবহার না হওয়ায় সেই প্রচেষ্টায় তেমন সাফল্য মেলেনি। বনদপ্তরের বর্তমান কর্মী-আধিকারিকরা তাতে সফল হয়েছেন। এজন্য তাঁদের কুর্নিশ জানাই। আগামী দিনে নানা প্রজাতির পাখির জন্ম দেওয়া এখানে সম্ভব হবে। ফলে জুলজিক্যাল পার্ক পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।-নিজস্ব চিত্র