• তৃণমূল বুথ সভাপতির দোকানে আগুন অভিযোগ দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে
    বর্তমান | ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: ফের প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। যার জেরে এবার খোদ তৃণমূলেরই বুথ সভাপতির দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দলের বিপক্ষ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। বুথ সভাপতির চোখের সামনেই আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় তাঁর দোকানে। অস্থায়ী দোকানটির অধিকাংশই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে রানাঘাট থানার হবিবপুরে। সোমবার সকালে পুলিস পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। ইতিমধ্যেই একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে তারা। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থল কলাবাগান দাসপাড়া। রানাঘাট ১ ব্লকের অন্তর্গত হবিবপুর পঞ্চায়েতের এই জায়গাটি ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের পূর্বপাড়ে। সেই সড়কের ধরেই অস্থায়ী চায়ের দোকান রয়েছে তৃণমূলের কলাবাগান বুথের সভাপতি মানিক ঘোষের। তিনি বলেন, রবিবার রাত প্রায় দুটো নাগাদ ফোন আসে আমার কাছে। তাতেই জানতে পারি, আমার দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি বেশ কিছুদিন যাবত অসুস্থ। পায়ে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তবুও ক্রাচ হাতে আমি ও আমার স্ত্রী দোকানে ছুটে আসি। দেখতে পাই এলাকারই বাসিন্দা মহাদেব ঘোষ, অপূর্ব ঘোষ এবং কালাচাঁদ ঘোষ আমাদের দেখে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দিল। মানিকের দাবি, তিনজনেই এলাকার সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। যদিও তারা মানিকের বিপক্ষ গোষ্ঠীর লোক। নির্বাচনের সময় এরা নাকি বিজেপির হয়েই কাজ করে। দীর্ঘদিন ধরে মানিক ওই এলাকায় সততার সঙ্গে রাজনীতি করছেন। সেই আক্রোশেই তাঁর দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর দোকানের ঠিক বিপরীতে অন্য একটি চায়ের দোকান রয়েছে। সেখানে নাকি নেশার আসর বসে। যার হোতা এই তিনজন। গোটা বিষয়টি জানিয়েই মানিক রানাঘাট থানার দ্বারস্থ হয়েছেন। 

    এদিকে, গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগ উড়িয়েছেন রানাঘাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা ব্লক তৃণমূলের নেতা প্রদীপ ঘোষ। তিনি বলেন, কী ঘটেছে আমি জানি না। তবে তৃণমূলে গোষ্ঠী বলে কিছু নেই। কারও মধ্যে ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে কিনা তা আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে দলের মধ্যে ভেদাভেদ নেই। আমরা সকলেই তৃণমূল। 

    তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দাবি ওড়ালেও এই ইস্যুতে শাসকদলকে আক্রমণ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিষয়টি নিয়ে নদীয়া দক্ষিণ সংগঠনিক জেলা বিজেপির মুখপাত্র সোমনাথ কর বলেন, ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে তৃণমূল সর্বত্রই নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে। এখানেও ভাগাভাগি নিয়ে গন্ডগোলের কারণেই এই কাণ্ড। তৃণমূলের হাত থেকে যদি তৃণমূলই বাঁচতে না পারে তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কী, তা সহজেই অনুমেয়। সাধারণ মানুষ আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের যোগ্য জবাব দেবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)