নলহাটির সাংগঠনিক বৈঠক থেকে সম্প্রীতির বার্তা কেষ্টর
বর্তমান | ১৫ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই বলে আসছেন এরাজ্যে ওয়াকফ সংশোধিত আইন চালু করব না। তারপরও কেন আমরা ভাইয়ে-ভাইয়ে হানাহানি, ঝামেলা করব? সকলের রক্তের রং লাল। আমরা এক হয়ে থাকব।’ সোমবার নলহাটির সাংগঠনিক বৈঠকে এই বার্তা দিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, জেলার দুই সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য ও সুদীপ্ত ঘোষ এবং মুরারই, নলহাটি, হাসন, ময়ূরেশ্বর বিধানসভার বিধায়ক, ব্লক সভাপতি সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। এদিন মন্ত্রী বলেন, বাংলা যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন ওয়াকফ বিল নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চক্রান্ত করছে বিজেপি। তাদের দোসর হয়েছে সিপিএম ও কংগ্রেস। আমরা তাদের ধিক্কার জানাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার বলেছেন, যতদিন আমি থাকব, এরাজ্যে ওয়াকফ আইন চালু হতে দেব না। তাই সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ আসুন, আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করি।
অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ওয়াকফ বিলের বিষয়টি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখছেন। তাহলে কেন আমরা একে অপরের রক্ত ঝরিয়ে বাংলার বদনাম করব? বুধবার নলহাটি ও বৃহস্পতিবার পাইকরে ওয়াকফ বিলের প্রতিবাদে মিছিল রয়েছে। সেগুলি যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, তার জন্য বিধায়ক থেকে দলীয় নেতৃত্ব ও জনপ্রতিনিধিদের শামিল হতে বলব। কোনও অশান্তি যেন না হয়। ভাইয়ে ভাইয়ে সম্পর্ক যেন খারাপ না হয়। আমরা সবাই এক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের সঙ্গে আছেন। কোনও চিন্তা করবেন না। কারও প্ররোচনায় পা দেবেন না। উস্কানি দিয়ে সুন্দর বাংলাটাকে শেষ করতে চাইছে। তার পিছনে ছুটবেন না। দিদির সঙ্গে থাকুন। কোনও অশান্তি করবেন না। তিনি আরও বলেন, বিধানসভা নির্বাচনে এই জেলার ১১টি আসনেই জিতব। দায়িত্ব দিলে বাইরেরও দু’-একটি সিটে জয়লাভ করব।
এরপরই তিনি বলেন, আগামী ২৭ এপ্রিল জেলা মিটিং হবে। এরপরই তিনি বিধানসভা ভোটের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বেন। আমি আগের মতোই প্রতিটি ব্লকভিত্তিক মিটিং শুরু করব। প্রতিটি সভাতেই ৫০-৬০ হাজার লোক জমায়েত করতে হবে। লোকের দায়িত্ব ব্লক সভাপতিদের। বাকি দায়িত্ব আমার। এদিন অনুব্রতবাবু মুরারই-২ ব্লকের জাজিগ্রাম অঞ্চলে ‘ফাইভ ম্যান কমিটি’ গড়ার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে ময়ূরেশ্বর অঞ্চলেও ফাইভ ম্যান কমিটি গড়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, রামপুরহাট-২ ব্লকের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা সুজাতা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর থেকে বিধায়ককে এই ব্লকের কোনও মিটিং-মিছিলে দেখা যাচ্ছে না। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, পেশায় চিকিৎসক ওই বিধায়কের ভুল চিকিৎসার বলি হয়েছেন সুজাতাদেবী। বিধায়কের নামে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়েছে। তারপর থেকেই বয়কট অবস্থায় রয়েছেন বিধায়ক। এদিন অনুব্রতবাবু রামপুরহাট-২ ব্লকের নেতৃত্বকে ওই বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছেন।