• কোন্নগরের গঙ্গায় স্নান করতে নেমে তলিয়ে নিখোঁজ দুই কিশোর, বারবার দুর্ঘটনায় প্রশ্ন
    বর্তমান | ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: কোন্নগরের বারোমন্দির ঘাটে গঙ্গাস্নানে নেমে তলিয়ে গেল ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দুই পড়ুয়া। সোমবার দুপুরে ওই ঘটনা ঘটেছে। রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়েও কিশোর পড়ুয়াদের হদিশ মেলেনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিখোঁজ পড়ুয়ারা রিষড়া থেকে স্নান করতে এসেছিল। সেখানকার এনএস রোড এলাকায় দু’জনেরই বাড়ি। তাদের নাম আমন সিং ও আদর্শ সিং। দু’জনেই সাঁতার জানত না। ঘটনার জেরে দুই পরিবারে যেমন শোকের ছায়া নেমেছে, তেমনই কোন্নগরের ওই ঘাট নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই ঘাটে গত দু’বছরে বারবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারপরেও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি। সেই উদাসীনতার জেরেই বারোমন্দির ঘাট মৃত্যুফাঁদ হয়ে উঠেছে।

    এনিয়ে কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস বলেন, খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ওই দুই কিশোরের রাত পর্যন্ত হদিশ মেলেনি। আমরা বারোমন্দির ঘাট নিয়ে উদ্বিগ্ন। সেখানে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের একটি কেন্দ্র করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেই কাজে অগ্রগতি হয়নি। পাশাপাশি, ওই ঘাটকে ঘিরে ধর্মপ্রাণ মানুষের একটি আবেগ আছে। ফলে ঘাটে ওঠানামা বন্ধ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের এক কর্তা বলেন, এদিন স্পিডবোট, ডুবুরি নামানো সহ যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। কিন্তু নিখোঁজদের হদিশ মেলেনি। নিখোঁজ নাবালকদের পরিবারকে নিয়ে এদিন কোন্নগরে গিয়েছিলেন রিষড়া পুরসভার চেয়ারম্যান বিজয় মিশ্র। আদর্শ সিংয়ের জ্যেঠু বিমল সিং বলেন, আমরা খুব বিপর্যস্ত। বিজয়বাবু বলেন, ওই কিশোররা সাঁতার জানত না। তারা কোন্নগরের মাঠে খেলতে গিয়েছিল। তারপরে গঙ্গায় কেন গেল সেটাই বিস্ময়কর। খুবই মর্মান্তিক ঘটনা।

    আমন ও আদর্শ দশম শ্রেণির পড়ুয়া। সোমবার স্কুল ছুটি ছিল। সেই কারণে আরও কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে তারা কোন্নগরের অ্যালকালি মাঠে খেলতে এসেছিল। খেলার শেষে সেখান থেকেই দুপুরে তারা বারোমন্দির ঘাটে স্নান করতে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় পাঁচজন কিশোরের একটি দল গঙ্গায় স্নানে নেমেছিল। বেশকিছু সময় তারা গঙ্গায় কাটায়। তারপর তিনজন উঠে এলেও আদর্শ ও আমন গঙ্গাতেই থেকে যায়। আচমকা চিৎকার শুনে স্থানীয়রা দেখেন, দু’টি কিশোর তলিয়ে যাচ্ছে। ঘাটে থাকা কিছু মানুষ দু’জনকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি। দু’জনেই তলিয়ে যায়। এদিনের ঘটনার জেরে নতুন করে বারোমন্দির ঘাটের মৃত্যুফাঁদ নিয়ে নানা মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, গত দু’বছরে প্রায় প্রতিমাসে অন্তত একজন করে ওই ঘাটে তলিয়ে গিয়েছেন। কোনও উৎসব বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান পর্বে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেই পরিসংখ্যান ওই ঘাটের নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)