হাওড়ায় যুবক খুনের ঘটনায় জোরালো হচ্ছে ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব
বর্তমান | ১৫ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: হাওড়ার বামনগাছিতে দুই নাবালিকা স্কুল ছাত্রীর বচসার জেরে এক প্রেমিকের খুনের ঘটনার তিনদিন পরেও অধরা অভিযুক্তরা। মূল অভিযুক্ত মনু শর্মা ও তার দলবলের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিস। এদিকে সাগর তিওয়ারির মৃত্যুর ঘটনার পিছনে তাঁর বান্ধবীর যোগসাজশ থাকতে পারে বলে দাবি করেছে মৃতের পরিবার। তদন্তকারীদের অনুমান, এই খুনের ঘটনায় ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব থাকলেও থাকতে পারে।
লিলুয়া থানা এলাকার বাসিন্দা নবম ও দশম শ্রেণির দুই ছাত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল বচসা। ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়েই বিবাদ বলে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি দশম শ্রেণির ছাত্রীর প্রেমিক মূল অভিযুক্ত মনু শর্মা নবম শ্রেণির নাবালিকাকে ফোন করে হেনস্তা করে বলে অভিযোগ। অপমানের বদলা নিতে নবম শ্রেণির সেই নাবালিকা তার প্রেমিক সাগর তিওয়ারি ও দুই বন্ধুকে নিয়ে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বামনগাছি ব্রিজের কাছে যায়। সেখানে দলবল নিয়ে এসে সাগরের উপর চড়াও করে মনু। বাঁশ দিয়ে সাগরের মাথায় মেরে পালিয়ে যায় সে। শনিবার মৃত্যু হয় সাগরের। লিলুয়া থানায় অভিযুক্ত মনু ও তার দলবলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে মৃতের পরিবার। ঘটনার তিনদিন পরেও বেপাত্তা রয়েছে মনু। এই ঘটনায় পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে সাগরের পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, সাগরের মৃত্যুর পিছনে পূর্ব পরিকল্পনা ছিল। এই পরিকল্পনায় তাঁর বান্ধবীও শামিল। মৃত যুবকের মামা রাজ পান্ডে বলেন, ‘শুক্রবার ভাগ্নের বান্ধবী নিজে ফোন করে ওকে ডেকেছিল। এরপর টোটোতে করে দুই বন্ধুকে নিয়ে সাগর বামনগাছি ব্রিজের কাছে যায়। সেখানেই ওকে খুন করা হয়। ভাগ্নের দুই বন্ধু সবটা দেখেছে। এরপরেও পুলিস মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করছে না।’
পরিবারের অভিযোগ, গত দেড় বছর ধরে নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সাগরের। দু’জনের প্রেমের বিষয়টি বাড়ির প্রত্যেকেই জানতেন। কিন্তু সাগরের আগে মনুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল মেয়েটির। তাই স্রেফ দুই বান্ধবীর বচসার জেরে ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে মানতে নারাজ মৃতের পরিবার। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, তর্কাতর্কির মধ্যেই অভিযুক্ত মনু আচমকা বাঁশ দিয়ে সাগরের মাথায় আঘাত করে। এই আক্রোশ পরিকল্পিত কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। সেক্ষেত্রে ত্রিকোণ প্রেমের বিষয়টি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। দুই নাবালিকাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিস। হাওড়া সিটি পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, ‘মূল অভিযুক্তকে খোঁজা হচ্ছে। তাকে ধরতে পারলে দলের বাকিদেরও ধরা যাবে। তখনই খুনের কারণ স্পষ্ট হয়ে যাবে।’