কারও ওপর আঘাত এলে পাশে দাঁড়াই, নাম না করে কালীঘাট থেকে অশান্ত মুর্শিদাবাদকে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা
আনন্দবাজার | ১৫ এপ্রিল ২০২৫
কালীঘাট স্কাইওয়াকের উদ্বোধনের অনুষ্ঠান থেকে মুর্শিদাবাদের অশান্ত এলাকার প্রতি বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সন্ধ্যায় কালীঘাটের অনুষ্ঠান মঞ্চে একটি বারের জন্যও মুর্শিদাবাদের অশান্ত এলাকার নামোচ্চারণ করেননি তিনি। তবে এ ক্ষেত্রে তাঁর বার্তা যে মুর্শিদাবাদের উদ্দেশেই ছিল, তা নিজের শব্দচয়নের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। তবে ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সংখ্যালঘু সমাজ যাতে আইন হাতে তুলে না নেন, সেই বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
মমতা বলেন, ‘‘একটা জিনিস মাথায় রাখুন, কারও ওপর কোনও আঘাত আসে, অবহেলিত হোক, শোষিতই হোক, সে বঞ্চিতই হোক, সে নির্যাতিতই হোক। সে কোনও ধর্মের লোকই হোক, আমরা কিন্তু সকলের পাশে দাঁড়াই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মানুষকে ভালবাসার চেয়ে বড় ধর্ম আর কিছুতে হতে পারে না। আমরা যখন জন্মাই তখন একাই আসি। আবার যখন চলে যাই, তখনও একাই চলে যেতে হয়। তাই কিসের লড়াই? কিসের দাঙ্গা? কিসের যুদ্ধ? কিসের অশান্তি? মনে রাখবেন মানুষকে ভালবাসলে সবকিছু জয় করা যায়। কিন্তু নিজেকে আলাদা করে রাখলে, বিচ্ছিন্ন করে রাখলে কাউকে জয় করা যায় না।’’
আইন হাতে তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ ভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করার অধিকার সকলের আছে। অবশ্যই অনুমতি নিয়ে। কিন্তু দয়া করে, সে যে-ই হোক এ, বি, সি, ডি, ই, এফ, জি, এইচ— আইন কখনও হাতে তুলে নেবেন না। আইনের জন্য তো আইনের রক্ষক আছে। আইনের ভক্ষক তো দরকার নেই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আপনাদের অনুরোধ করব, কেউ কেউ প্ররোচনা দেবে, কিন্তু প্ররোচিত হবেন না। প্ররোচনার সময় যে মাথা ঠান্ডা রাখে সেই তো আসল জয় করে। তখনই তো আসল জয় হয়।’’
নিজের বক্তৃতার শেষের দিকে মমতা প্রশ্ন তোলেন, ‘‘ধর্ম বলতে আমরা বুঝি ভক্তি, স্নেহ, মানবতা, শান্তি, সৌহার্দ্য, সংস্কৃতি, সাদৃশ্য এবং ঐক্য। মানুষের প্রতি ভালবাসা যে কোনও ধর্মের অন্যতম সর্বোচ্চ প্রকাশ। আমরা একা জন্মাই এবং একা মারা যাই, তা হলে কেন লড়াই? কেন দাঙ্গা, যুদ্ধ বা অশান্তি?’’