• ‘তৃণমূলের দালাল’! দিল্লিযাত্রা নিয়ে কটাক্ষ শুভেন্দুর, ‘দৃষ্টিভ্রম’ বলে পাল্টা জবাব চাকরিহারাদের
    আনন্দবাজার | ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন ২৫,৭৩৫ জন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। সুপ্রিম-রায়ের পরই পথে নেমেছেন চাকরিহারারা। কলকাতার রাজপথে তো বটেই দিল্লির যন্তর-মন্তরেও ধর্না দেবেন তাঁরা। সোমবারই ধর্মতলায় ওয়াই চ্যানেল থেকে বাসে চেপে দিল্লির পথে রওনা হন চাকরিহারাদের একাংশ। তবে তাদের এই দিল্লিযাত্রাকে ‘নাটক’ বলে অভিহিত করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুধু তা-ই নয়, ওই আন্দোলনকারী চাকরিহারাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ‘তৃণমূলের দালাল’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। শুভেন্দুর কটাক্ষের পাল্টা জবাব দেন চাকরিহারারাও।

    ২০১৬ সালে এসএসসির শিক্ষক এবং শিক্ষককর্মী নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। অভিযোগ, ওই নিয়োগপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ ভাবে হয়নি। দুর্নীতি হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। তদন্তের রিপোর্ট দেখে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষককর্মীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। পরে বিষয়টি গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালতও চাকরি বাতিলের পক্ষেই রায় দেয়। রায় প্রকাশ্যে আসার পরই তোলপাড় শুরু হয় রাজ্য-রাজনীতিতে। চাকরিহারাদের একাংশের দাবি, ‘যোগ্য’ হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের চাকরি হারাতে হল। চাকরি ফেরতের দাবিতে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৮০ জনের বুধবার যন্তর-মন্তরে ধর্না দেওয়ার কথা।

    সেই আন্দোলনকারীদেরই ‘তৃণমূলের দালাল’ বলে কটাক্ষ করলেন শুভেন্দু। বিধানসভার বাইরে চাকরিহারাদের দিল্লিযাত্রা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের দালালেরা যাচ্ছেন।’’ সেই সঙ্গে মেহবুব (মণ্ডল) বলে এক চাকরিহারার নামও উল্লেখ করেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, ‘‘মেহবুব মমতার (বন্দ্যোপাধ্যায়) বন্দনা করছিলেন। এই সব নাটকবাজি জানা আছে। দিল্লি পুলিশ আছে তো। তাদের লাঠির সাইজ আট ফুট।’’

    চাকরিহারাদের নিয়ে তৈরি সমস্যার সমাধান বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কাছেই আছে বলে দাবি করেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে যোগ্যদের তালিকা ফেলে দিন। সুপ্রিম কোর্টকে বলুন হুজুর যোগ্যদের তালিকা এনেছি। সুপ্রিম কোর্ট নিশ্চয় বিবেচনা করবে।’’ বিরোধী দলনেতা মনে করেন, মমতার সরকার ‘ইচ্ছে’ করেই যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করছে না! তাঁর কথায়, ‘‘যখনই যোগ্য-অযোগ্য বাছা হবে, তখনই প্রমাণ হবে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। হয় তৃণমূল করার সুবাদে, নয় টাকার বিনিময়ে। যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করছে না, কারণ হাতেনাতে ধরা পড়বে। তখনই সরকারকে স্বীকার করতে হবে, তারা অযোগ্যদের চাকরি দিয়েছে, যা অপরাধ।’’

    শুভেন্দুর নিশানায় থাকা মেহবুবও পাল্টা জবাব দিয়েছেন। নিজের ফেসবুক পোস্টে বিরোধী দলনেতাকে খোঁচা দিয়ে লেখেন, ‘‘শুভেন্দুবাবু, চাকরি বাঁচানোর লড়াইয়ে নেমেছি। কারও দালালি করতে নামিনি।’’ এখানেই না থেমে তিনি আরও লেখেন, ‘‘আপনি (শুভেন্দু অধিকারী) যদি আপনার পুরনো দিনের চরিত্রের সঙ্গে আমার মিল পেয়ে থাকেন তা হলে সেটা আপনার দৃষ্টিভ্রম।’’ মেহবুবের আহ্বান, ‘‘পারলে পাশে দাঁড়ান।’’ উল্লেখ্য, গত শুক্রবার শিক্ষা দফতরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন মেহবুব।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)