সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সাতজন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হওয়ায় পঠনপাঠন বন্ধ হওয়ার মুখে বাদুড়িয়ার এলএমএস বয়েজ় হাই স্কুলে। জীবন বিজ্ঞান, কম্পিউটার এবং নিউট্রিশন এই তিনটি বিষয়ের ক্লাস বন্ধ ওই শিক্ষকদের চাকরি চলে যাওয়ায়।
বাদুড়িয়ার এই স্কুলটিতে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৬৬০। ছাত্রীর সংখ্যা ৩৫০জন, ছাত্র সংখ্যা ১৩১০জন। শিক্ষক শিক্ষিকা ছিলেন ৩৩জন। শিক্ষাকর্মী দু’জন। এর মধ্যে থেকে সাতজন শিক্ষক-শিক্ষিকা চাকরি হারালেন। তাঁদের মধ্যে একজন বলেন, ‘‘ছোট থেকে শিক্ষিকা হব স্বপ্ন ছিল। অন্য চাকরির পরীক্ষায় না বসে ২০১৬ সালে এসএসসি’র প্রস্তুতি নিলাম। পরীক্ষা দিয়ে চাকপি পেয়েছি। কিছুদিন আগে বিয়েও করেছি। এখন হঠাৎ করে শুনছি চাকরি নেই। একটা চাকরির স্বপ্ন বুকে নিয়ে এত পরিশ্রম করলাম। সর্বোচ্চ আদালত থেকে সরকার সকলের কাছে অনুরোধ, আমাদের জন্য কিছু ভাবা হোক।’’
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আর্শাদুর রহমান বলেন, ‘‘এমনিতেই শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষক-শিক্ষিকা কম। তার উপরে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সাতজন বাতিল হওয়ায় রীতিমত সমস্যায় পড়তে হয়েছে। বিশেষ করে জীবন বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষক সঙ্কট তৈরি হল। যার জেরে পরীক্ষার খাতা দেখা থেকে ক্লাস বন্ধ রাখতে বাধ্য হতে হচ্ছে।’’
শুধু ওই স্কুলই নয়, হাসনাবাদ, বাদুড়িয়া, হিঙ্গলগঞ্জ-সহ বিভিন্ন স্কুলে শেষ হয়েছে পার্বিক পরীক্ষা। পরীক্ষা চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক বাতিল হন। কোনও রকমে পরীক্ষা পর্ব পার করলেও খাতা দেখা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই বিজ্ঞানের শিক্ষক না থাকায় কে খাতা দেখবেন বুঝতে পারছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ। অনেক স্কুলেই অভিভাবকের স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে জানতে চাইছেন তাঁদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ কী হবে। স্কুলগুলির তরফে জানানো হয়েছে, বিষয়টি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে জানানো হয়েছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে অবশ্য জানানো হয়, নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।