নতুন বছরের আগে চৈত্রের শেষ রবিবারে কেনাকাটার ভিড় ছিল জমজমাট। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, দুই ২৪ পরগনাতেই ব্যাপক ভিড় হচ্ছে চৈত্র সেলের বাজারে।
বনগাঁয় ফুটপাত জুড়ে নানা পোশাক, জুতোর পসরা নিয়ে হাজির হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিকেল হতেই ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। বনগাঁ বাটার মোড়, রাখালদাস সেতুর ফুটপাত জুড়ে বসেছে শয়ে শয়ে অস্থায়ী দোকান। যশোর রোডের পাশেও সেলের জিনিসপত্র নিয়ে অস্থায়ী দোকান বসেছে। বড় দোকান, শপিং মলগুলিতেও চৈত্র সেল উপলক্ষে জিনিসপত্র কেনাকাটায় ছাড় দেওয়া হচ্ছে। প্রচুর মানুষ রাত পর্যন্ত কেনাকাটা করছেন। পেশায় ভ্যানচালক, বিমল গায়েন বললেন, ‘‘পুজোর সময় বাড়িঘরে জল উঠে গিয়েছিল। কেনাকাটা করতে পারিনি। চৈত্র সেলের বাজারে কেনাকাটা করলাম। দামও কম।’’
চৈত্র সংক্রান্তির আগে ব্যাপক ভিড় দেখা গিয়েছে ডায়মন্ড হারবার, লক্ষীকান্তপুর, কাশীনগর ও রায়দিঘির বাজারে। বড় দোকানের পাশাপাশি ফুটপাতের ছোট দোকানেও ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ। নববর্ষের জন্য দশকর্মা দোকানেও বেশ ভিড় ছিল। মিষ্টি, ফলের দোকানেও ছিল ব্যাপক ভিড়। বারাসত, দেগঙ্গা, দত্তপুকুর ও আমডাঙার পোশাকের দোকানগুলি বাংলা বছরের শেষ রবিবার ছিল ভিড়ে ঠাসা। ব্যবসায়ীদের দাবি, এ বারের চৈত্র সেলের বাজারে বাড়তি পাওনা ছিল ইদ। ফলে বিক্রিও বেড়েছে। বারাসতের ব্যবসায়ী বৈকুণ্ঠ ঘোষ বলেন, ‘‘ইদ আর চৈত্র সেল একসঙ্গে হওয়ায় এ বার লাভের মুখ দেখেছি। করোনার পর এ বারই প্রথম এত বেশি বিক্রি হয়েছে।’’ একই সুরে দত্তপুকুরের ব্যবসায়ী প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘বেশ কয়েক বছর পর এ বার ভাল বিক্রি হয়েছে।’’ দেগঙ্গার ব্যবসায়ী স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘অনেক ক্রেতা শহরমুখী এ বার। তাঁরা যদি আমাদের এখানে কেনাকাটা করতেন তাহলে লাভের পরিমাণ অনেক বেশি হত।’’
শিল্পাঞ্চলে আবার চৈত্র সেলের দাম চড়া বলে দাবি ক্রেতাদের। ব্যারাকপুর, কাঁচরাপাড়ায় তা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ক্রেতাদের। ব্যারাকপুর আনন্দপুরীতে একটি পোশাকের দোকানদার তীর্থঙ্কর দাস বলেন, ‘‘পাইকারি বাজার আকাশছোঁয়া। সেল মানে এখন আর অর্ধেক দাম নয়, সেলের সামগ্রীও ভিন্ন।’’ কিছুটা অন্য ছবি ধরা পড়েছে ভাঙড়ে। চৈত্রের শেষ রবিবারের বিকেলেও ভাঙড়ের বিভিন্ন দোকানে ভিড় তেমন জমেনি। প্রাণগঞ্জ বাজারের কাপড়ের ব্যবসায়ী সেলিম আখতার বলেন, ‘‘অন্য বছরের তুলনায় এ বছর চৈত্র সেলের বাজার আশানুরূপ হয়নি। পরিচিত বহু শিক্ষক পরিবার এবার কেনাকাটা করতে আসেননি।’’
এদিন কাকদ্বীপ বাজারে পোশাক, জুতো, প্রসাধনীর বাজারে বহু মানুষ কেনাকাটা করেন। একই ছবি ধরা পড়েছে সাগর, নামখানা, পাথরপ্রতিমার বাজারগুলিতেও। কাকদ্বীপ বাজার ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি খোকন মিদ্দ্যা বলেন, গত ক’দিন ধরেই বিক্রি বেড়েছে। সব দোকানেই চৈত্র সেলের ব্যবসা ভাল হয়েছে।’’