এই সময়: পূর্ব ঘোষণা মতোই সোমবার চাকরি ফেরতের দাবি নিয়ে দিল্লি রওনা দিলেন কর্মহারা শিক্ষকরা। এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেল থেকে মোট ৬০ জন কর্মহারা শিক্ষক বাসে চেপে দিল্লিতে রওনা দেন। সব কিছু ঠিক থাকলে বুধবার থেকে যন্তর মন্তরে ধর্নায় বসবেন এই শিক্ষকরা। যে যে রাজ্যের মধ্যে দিয়ে তাঁদের বাস যাবে, সেখানেও নিজেদের কথা জানাতে লিফলেট বিলি করবেন কর্মহারারা। এ দিকে চাকরিহারাদের এই দিল্লি অভিযানকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, ‘তৃণমূলের দালালরা দিল্লি যাচ্ছে।’
পাশাপাশি তিনি শিক্ষকদের মনে করিয়ে দেন, দিল্লি পুলিশের হাতে ৮ ফুটের লাঠি রয়েছে। শুভেন্দুর এই মন্তব্য নিয়ে চাকরিহারা শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এ দিন শুভেন্দু সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘তৃণমূলের দালালরা যাচ্ছে। ওই মেহবুব বলে ছেলেটাকে নিয়ে যাচ্ছে তো? যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বন্দনা করছিল। ওসব ড্রামাবাজি জানা আছে।’ দিল্লি পুলিশের লাঠির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দিল্লি পুলিশের লাঠির সাইজ আট ফুট।’
বিরোধী দলনেতার দাবি, ‘এই সমস্যার সমাধান মমতার কাছে আছে। যোগ্যর তালিকা ফেলে দিন। সুপ্রিম কোর্টকে বলুন হুজুর যোগ্যর তালিকা এনেছি। সুপ্রিম কোর্ট নিশ্চয়ই বিবেচনা করবে। এরা যোগ্য–অযোগ্য বাছাই করছে না, কারণ হাতেনাতে ধরা পড়ে যাবে। তাহলে সরকার অ্যাডমিট করে নেবে যে, ওরা অযোগ্যদের সার্ভিসে নিয়েছিল। এটা একটা ক্রিমিনাল অফেন্স।’
যদিও বিরোধী দলনেতার এই বক্তব্যে ধর্নাস্থলে চাকরিহারাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। মেহবুব বলে যাঁর নাম শুভেন্দু উল্লেখ করেছেন, তিনি কর্মহারাদের অন্যতম নেতা মেহবুব মণ্ডল। তিনি যদিও দিল্লিতে যাননি। সহকর্মীদের সঙ্গে কলকাতাতেই ধর্না দিচ্ছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘শুভেন্দু অধিকারী মনে করিয়ে দিলেন আসলে সব শাসকের রঙই এক। এখানে আমরা পুলিশের লাঠি খেয়েছি, তিনি আরও বড় পুলিশের লাঠি দেখাচ্ছেন। কিন্তু ওঁর মাথায় রাখা উচিত এখানে আমরা কোনও পার্টি অফিসে ঢুকবো বলে আন্দোলন করছি না। নিজেদের চাকরিটা ফেরত নিয়ে স্কুলে ফিরব বলেই আন্দোলন চালাচ্ছি।’
এ দিন যে শিক্ষকরা দিল্লির উদ্দেশে রওনা হন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন চিন্ময় মণ্ডল। কেন যাচ্ছেন তাঁরা দিল্লিতে? চিন্ময়ের কথায়, ‘আমাদের সঙ্গে যে অবিচার হয়েছে সেটা রাজ্যের মানুষ জেনেছেন। আমরা চাই আমাদের কথা সারা দেশের মানুষ জানুক। দিল্লি দেশের রাজধানী। সেখানেই দেশের সব রাজনৈতিক দলের যাতায়াত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী–রাষ্ট্রপতিরাও আছেন। আমাদের কথা তাঁদের সামনে তুলে ধরতেই দিল্লিতে যাচ্ছি।’ চিন্ময়রা জানান, তাঁদের কাছে যন্তর মন্তরে ধর্না দেওয়ার পুলিশি অনুমতি রয়েছে।