অঙ্ক, বিজ্ঞান পড়াবেন কে? বিদ্যালয়ের শতবর্ষেও উঠে আসছে কোটি টাকার প্রশ্ন...
আজকাল | ১৫ এপ্রিল ২০২৫
মিল্টন সেন
অতিক্রান্ত হয়েছে স্কুলের একশো বছর। নারীশিক্ষার প্রসারে একশো বছর আগে মাত্র চল্লিশ জন ছাত্রী নিয়ে তৈরি হয় লালবাগান বালিকা বিদ্যালয়। তৎকালীন সময়ে চন্দননগরের বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব হরিহর শেঠ সহ বিশিষ্টজনদের সাহায্যে শুরুতে স্থানীয় ভোলানাথ দাসের বাড়িতে চলত এই স্কুল। পরবর্তী সময়ে ফরাসী ভাইসরয়ের স্ত্রী মাদাম জুভান দানপত্র করে দেন স্কুলের জমি। রাধিকালাল রক্ষিতের জমিতে গড়ে ওঠে লালবাগান বালিকা বিদ্যালয়। সোমবার শুরু হয়েছে এই স্কুলের শতবর্ষ উদযাপন।
কিন্তু এই অনুষ্ঠানেও মুখ্য হয়ে উঠল শিক্ষকদের চাকরির হারানোর প্রসঙ্গ। প্রশ্ন উঠল এবার থেকে তাহলে কে পড়াবেন অঙ্ক, বিজ্ঞান? ১৯২৬ সালের পয়লা বৈশাখ আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছিল লালবাগান বালিকা বিদ্যালয়ের। ইতিমধ্যেই নারী শিক্ষার প্রসারে নজির গড়েছে শতাব্দী প্রাচীন এই স্কুল। নিষ্ঠার সঙ্গে সেই কাজকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন স্কুলের শিক্ষিকারা। স্কুলের শতবর্ষ উদযাপনের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় ছাত্রীদের হাতে দেখা যায় স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষিকাদের ছবি। কিন্তু স্কুলের এই গর্বের দিনেও বর্তমান শিক্ষিকাদের মন ভারাক্রান্ত সহকর্মীদের জন্য।
স্কুলের শতবর্ষের অনুষ্ঠান নিয়ে তাঁরাও যথেষ্টই উৎসাহী ছিলেন অন্যান্যদের মতোই। অথচ আদালতের নির্দেশে তাঁদের চাকরি বর্তমানে অনিশ্চিত। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অর্পিতা মন্ডল বলেছেন, ‘২০১৬ সালের প্যানেল থেকে পাঁচজন শিক্ষিকা তাঁর স্কুলে এসেছিলেন। তার মধ্যে একজন আগেই চলে যান উৎস শ্রী নিয়ে। বাকি চার জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। নবম ও দশম শ্রেণীতে পড়াতেন তিনজন। তাঁরা অঙ্ক এবং বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকা ছিলেন। ফলে, স্কুলের সায়েন্স বিভাগে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আর একজন শিক্ষিকা একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির হোম ম্যানেজমেন্ট পড়াতেন। তিনিও চলে গেছেন। ফলে সেই ক্লাসও কি করে চলবে তাও জানা নেই’।
উল্লেখ্য, সোমবার চন্দননগর মেরিপার্ক ময়দান থেকে লালবাগান বালিকা বিদ্যালয়ের শতবর্ষের শোভাযাত্রা শুরু হয়ে তা চন্দননগর শহর প্রদক্ষিণ করে। বিদ্যালয়ের প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিভাগের ছাত্রী এবং শিক্ষিকাদের নিয়ে শোভাযাত্রা শেষ হয় স্কুলে গিয়ে। শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী।