• ঘরে ফিরতে বুক কাঁপছে ধুলিয়ানের বাসিন্দাদের, মালদার স্কুলে এখনও আশ্রিত অনেকেই
    এই সময় | ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • সংশোধিত ওয়াকফ আইনকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিনে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত দু’দিনে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান থেকে শ'য়ে শ'য়ে পরিবার আশ্রয়ের জন্য উদ্বাস্তুর মতো নদী পার করে মালদায় এসে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা, জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন মালদার পাল্লালপুর হাই স্কুলে। জেলা প্রশাসনের আধিকারিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের দু’বেলা খাওয়ানোর ব্যবস্থা করছেন। সেই সঙ্গে স্কুলে আশা কর্মীরাও রয়েছেন, যাতে কারও শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা যায়। তবে মালদায় আশ্রয় নেওয়া ধুলিয়ানের বাসিন্দাদের এখনকার অবস্থা কী রকম? আশ্রয় হারিয়ে তাঁরা কী বলছেন?

    মালদার ওই স্কুলে আশ্রয় নেওয়া ধুলিয়ানের বাসিন্দা জানকী মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের কেন এখানে আসতে হলো, আমরা বুঝতে পারছি না। আমাদের অপরাধ কী ছিল? কেনই বা আমাদের উপরের অত্যাচার হলো? ঘরবাড়ি কেন ভাঙা হলো? কিছুই বুঝতে পারছি না।’ ধুলিয়ানের অন্য একজন বাসিন্দা নমিতা মন্ডল পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসন কোনও রকম সহযোগিতা করেননি। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় আজ আমরা বেঁচে আছি। সেই দিনের ঘটনা মনে পড়লেই গা শিউরে উঠছে।’ সেই সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, ধুলিয়ান থেকে তাঁরা প্রাণ হাতে করে মালদায় পাল্লালপুর হাই স্কুলে এসে উঠেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের দেখাশোনা করে দু’বেলা খাওয়ারের ব্যবস্থা করছেন। ধুলিয়ান থেকে পালিয়ে আসা একজন মা বলেন, ‘সবকিছু পুড়িয়ে দিয়েছে। মাছ ধরার নৌকো করে প্রাণভয়ে সন্তানদের বাঁচানোর জন্য এখানে পালিয়ে এসেছি। বাড়ি পুড়িয়ে ট্যাঙ্কিতে বিষ মিশিয়ে দিয়েছে। কী ভাবে সেখানে থাকব?’

    জানা গিয়েছে, ওই স্কুলে মোট ৬০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সকলেই ফের ঘরে ফিরে যেতে চান বলে জানিয়েছেন। তবে সূত্রের খবর, সোমবারই ২০টি পরিবার সেখান থেকে ধুলিয়ানে নিজের বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন। মালদা জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, যাঁরা ধুলিয়ান থেকে মালদার পাল্লালপুর হাই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁদের পাশে রয়েছে প্রশাসন। এর পাশাপাশি ধুলিয়ানে যাঁরা নিজের বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন, তাঁদের বাড়ি পৌঁছনোর জন্য সহযোগিতাও করা হচ্ছে।

    মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর, সুতি, সামশেরগঞ্জের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বলে প্রশাসনের আধিকারিকদের দাবি। সেখানে সিআরপিএফ-বিএসএফের নজরদারি ও টহল চলছে। সেখানকার বাসিন্দারা চাইছেন, আপাতত সেখানে সিআরপিএফ-বিএসএফের নজরদারি থাকুক।

  • Link to this news (এই সময়)