শান্তনু সরকার, শিলিগুড়ি: বাংলা নববর্ষ ও হালখাতার যোগ সেই সুদূর প্রাচীন থেকে। সারাবছর যে দোকান থেকে জিনিসপত্র কেনা হয় নববর্ষের দিন সেই দোকানে গিয়ে পুরনো বকেয়া মিটিয়ে নতুন খাতা শুরু করা হয়। তাই নাম হালখাতা। পুরোনো বকেয়া মেটানোর সঙ্গে সঙ্গে নতুন কিছু কেনাই এই দিনটার রীতি। অক্ষয় তৃতীয়া, ধন্তেরস থাকলেও নববর্ষের দিনেই বেশির ভাগ সোনার দোকানে পুজো দিয়ে হালখাতা শুরু হয়।
কিন্তু এবছরটা তেমন নয়,মত স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের। বিশ্বজুড়ে মন্দার বাজারে সোনা এখন এক লাখ ছুঁই ছুঁই। সোমবার বাজারে ২৪ ক্যারেট পাকা সোনার প্রতি ১০ গ্রামের দাম ছিল ৯৮৮৮০ টাকা ।
সোনার এই দামের পেছনে আমেরিকার শুল্ক নীতি, বিশ্ব জুড়ে যুদ্ধ, ও শেয়ার বাজারের পতনকেই দায়ী করছে বিশেষজ্ঞ মহল। আর এই চড়া দামের জন্য সোনার দোকান থেকে মুখ ঘুরিয়েছেন অনেক ক্রেতাই।
এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে শিলিগুড়ির স্বর্ণ ব্যবসায়ী শুভাশিষ কর্মকার জানান, বৈশাখ মাস পড়লেই বিয়ের মরসুম শুরু। সোনার এই ব্যাপক দামের জন্য এখন ক্রেতাদের হাল্কা গয়নার দিকে ঝোঁক। বিয়ের মরশুমের বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই সোনার অলঙ্কার তৈরির 'অর্ডার' আসতে শুরু করে। কিন্তু এই বছর তার ঠিক উল্টো। ক্রেতা নেই বললেই চলে। মহিলাদের মধ্যেই এখন সোনার অলঙ্কার-এর প্রতি অনিহা। মূল কারণ, সোনার চড়া দাম।
মাসে মাসে টাকা জমিয়ে গয়না বানানোর একাধিক 'স্কিম' থাকলেও সারা বছর টাকা জমিয়ে এখন ৫ গ্রাম সোনা কেনাও অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমান বাজারে। জানাচ্ছেন ক্রেতারা। যার জন্য আক্ষেপের সুরে স্বর্ন ব্যবসায়ীদের কথা, 'বাজার ফাঁকা। নববর্ষের আনন্দ কোথায়!'