• গঙ্গাসাগরে মুড়িগঙ্গা নদীবাঁধে ধস, আতঙ্কে বাসিন্দারা
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • মুড়িগঙ্গা নদীবাঁধে বড় ধস। ২০০ ফুটেরও বেশি এলাকা জুড়ে ধস নামায় তুমুল আতঙ্কে গঙ্গাসাগরের মুড়িগঙ্গা পঞ্চায়েতের কসতলার বাসিন্দারা। সোমবার থেকে নদীবাঁধে এই ধস নেমেছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নদী বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। বস্তায় মাটি ভরে ধস কবলিত এলাকায় বসিয়ে মেরামতের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে খবর। সাগরের বিডিও কানহাইয়া কুমার রায় জানান, সেচ দপ্তর ওই এলাকায় রিং বাঁধ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। তবে জরুরি ভিত্তিতে এখন মাটি ফেলে জল আটকানো সম্ভব হয়েছে।

    এদিকে প্রাথমিকভাবে জল আটকানো গেলেও আতঙ্ক কাটছে না স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের আশঙ্কা, নদীবাঁধ শক্তপোক্তভাবে মেরামত না করলে পুরো গ্রাম নোনা জলে প্লাবিত হতে পারে। পূর্ণিমার কোটালে জলের স্রোত ও পরিমাণ অনেকটাই বেশি। এই জল দ্বিতীয়া ও তৃতীয়ায় আরও বাড়তে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সেক্ষেত্রে আরও বড় এলাকাজুড়ে ধস নামার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। মুড়িগঙ্গা-১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শিবশঙ্কর রঞ্জিত জানান, স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে সেচ দপ্তর বাঁধ মেরামতের কাজে হাত লাগিয়েছে।

    এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার গঙ্গাসাগর বাঁচাতে কোনও পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ করেছেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী ও সাগরের বিধায়ক বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। তিনি বলেন, ‘গঙ্গাসাগরকে বাঁচাতে কেন্দ্রের কাছে বারবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। রাজ্য সরকার একক প্রচেষ্টায় স্থায়ী ও অস্থায়ী নদীবাঁধ এবং সমুদ্রবাঁধগুলি নির্মাণ ও মেরামত করছে। সেচ দপ্তরের বাস্তুকাররা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। সেচমন্ত্রীর সঙ্গে শীঘ্রই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।’ এদিকে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, রাজ্য সরকার কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা না করলে গঙ্গাসাগরকে রক্ষা করা যাবে না।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরও কসতলায় ৭০০ ফুটের মত অংশ জুড়ে মুড়িগঙ্গা নদীবাঁধে ধস নেমেছিল। এবার তার ঠিক পাশেই ধস নেমেছে। রাজ্য সরকারের গত বারও বাঁধ মেরামত করে। এবারও যুদ্ধকালীন তৎপরতায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে গ্রাম বাঁচানোর কাজে নেমেছেন সেচ দপ্তরের কর্মীরা। উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের আশঙ্কা, দ্রুত নদীবাঁধ মেরামতি না হলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হবে। নোনাজল জমিতে ঢুকে গেলে সব নষ্ট হয়ে যাবে বলে উদ্বেগে রয়েছেন তাঁরা। এক বাসিন্দা বলেন, ‘ঘরবাড়ি, পুকুর তো যাবেই। ঝড়-বৃষ্টির দিনে যেন উদ্বাস্তু হতে না হয়। প্রতি বছরই একই দশা হয় আমাদের। প্রশাসন দ্রুত স্থায়ী ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক।’
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)