পয়লা বৈশাখ। হালখাতার দিন। শুভ নববর্ষ। বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন। নতুন টি শার্ট, নতুন শাড়ি। কথা ছিল একটু অন্যরকম ভাবে দিনটাকে কাটাবেন। কিন্তু কোথাও যেন একরাশ চিন্তা মনকে গ্রাস করে রেখেছে। একেবারেই শুভ কিছু নিয়ে এল না এবারের পয়লা বৈশাখ। বিশেষত চাকরিহারা শিক্ষকদের জন্য। কেমন আছেন তাঁরা। খোঁজ নিল হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।
ইতিমধ্যেই চাকরিহারা শিক্ষকরা অবস্থানে বসেছেন। সেই অবস্থান এখনও চলছে। তাঁরা অবস্থান স্থলের কাছে একটি বাক্স রেখেছেন। সেটা আসলে মতামত দেওয়ার জন্য বাক্স। সেখানে সাধারণ মানুষ মতামত দিতে পারেন। রিভিউ পিটিশনের ক্ষেত্রে কী ধরনের বক্তব্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে তুলে ধরা যায় সেব্যাপারেই মতামত চেয়েছেন তাঁরা।
সেই বাক্সে যে কেউ তাঁদের মতামত দিতে পারেন। ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে বসেছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। তাঁদের দাবি তাঁরা যোগ্য তারপরেও চাকরি গিয়েছে তাঁদের। ওয়াই চ্যানেলে একটি বাক্স বসিয়েছেন তাঁরা। সেখানে মতামত লিখে ফেলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
ইতিমধ্য়েই শিক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে তাঁদের। তারপর কিছুটা হলেও আশ্বাস মিলেছে। কিন্তু বাস্তবে তাঁরা তাকিয়ে আছেন আদালতের দিকে। সুপ্রিম কোর্ট থেকে রায় কিছু না বের হলে তাঁরা কী করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না। তবে আন্দোলনের পথ থেকে সরছেন না চাকরিহারা শিক্ষকরা। তবে মন একেবারেই ভালো নেই তাঁদের। এমন পয়লা বৈশাখ আগে তাঁরা বিশেষ দেখেননি। চাকরি পাওয়ার পর থেকে জীবনটা একেবারে অন্য়রকম হয়ে গিয়েছিল। এদিন বাড়িতে ভালোমন্দ খাওয়া হত। সবাই মিলে পরিবার নিয়ে আনন্দ করতেন। কিন্তু সেসব আজ হারিয়ে গিয়েছে। অনেকেই বসে রয়েছেন ধর্নাস্থলে। কী করবেন বুঝতে পারছেন না। মন বিষন্ন।
একাধিক শিক্ষক বলেন, এবার পয়লা বৈশাখে ভালো রান্নাও হয়নি বাড়িতে। খেতেও ভালো লাগছে না। গলা দিয়ে ভাত যেন নামছে না। সবসময় কান্না পাচ্ছে।
চাকরিহারা শিক্ষক রাজীব হাঁসদা হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে বলেন, আমাদের আজ অত্য়ন্ত মন খারাপ। পরিবারের কেউ পয়লা বৈশাখের আনন্দ উদযাপন করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতি আগে কোনও দিন হয়নি। আমাদের মন অত্য়ন্ত বিষন্ন। পয়লা বৈশাখ এসেছে ঠিক কথাই কিন্তু আমাদের মনে আনন্দ নেই।
সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, আমরা দেখলাম কয়েকদিন আগে অযোগ্য শিক্ষকরাও মিছিল করেছিল। এটা দেখে আমরা হতবাক। বাংলার বুকে চোরেরা মিছিল করছে এটা আমরা কিছুতেই মানতে পারছি না। এটা দেখে আমরা অবাক। কার কাছ থেকে এই অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন তারা?
প্রসঙ্গত সম্প্রতি কলকাতায় অযোগ্য শিক্ষকরাও মিছিল বের করেছিলেন। সেই মিছিল থেকে তারা চাকরির দাবি করতে থাকেন। এটা দেখে অবাক হয়েছেন অনেকেই।