ন্যায়বিচার ও পুলিশের কাজে খারাপ অবস্থা বাংলা-উত্তর প্রদেশের, সেরা দক্ষিণ
আজ তক | ১৬ এপ্রিল ২০২৫
মঙ্গলবার প্রকাশিত চতুর্থ ইন্ডিয়া জাস্টিস রিপোর্ট ২০২৫-এর পরিসংখ্যান বলছে, পুলিশের কর্মক্ষমতা, ন্যায়বিচার প্রদান এবং কারা ব্যবস্থাপনার দিক থেকে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্যগুলি শীর্ষস্থান দখল করেছে। এই তালিকায় প্রথম স্থান দখল করেছে কর্ণাটক, এবং পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে সবচেয়ে নীচে, অর্থাৎ ১৮টি বড় ও মাঝারি আকারের রাজ্যের মধ্যে সবার শেষে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিচার ব্যবস্থার চারটি প্রধান স্তম্ভ — পুলিশ, বিচার বিভাগ, কারাগার এবং আইনি সহায়তা — এর ভিত্তিতে রাজ্যগুলির পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই চার স্তম্ভের উপর ভিত্তি করেই মূল র্যাঙ্কিং নির্ধারণ করা হয়।
শীর্ষে দক্ষিণ, পশ্চিমবঙ্গ তলানিতে
বড় ও মাঝারি রাজ্যগুলির তালিকায় কর্ণাটক (৬.৭৮/১০), অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কেরালা এবং তামিলনাড়ু প্রথম পাঁচ স্থানে রয়েছে। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ-এর স্কোর ছিল মাত্র ৩.৬৩, যা এই রাজ্যকে তলানিতে ঠেলে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পরেই রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ড ও রাজস্থান।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, আগের সংস্করণে ১১তম স্থানে থাকা তেলেঙ্গানা এবার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে।
ছোট রাজ্য ও অন্যান্য সূচক
সিকিম ছোট রাজ্যগুলির মধ্যে সেরা পারফর্ম করেছে, যেখানে গোয়া সবচেয়ে পিছিয়ে।
২০২২ থেকে ২০২৫-এর মধ্যে পুলিশ বিভাগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে বিহার। তবে জনসংখ্যার অনুপাতে বিহারেই প্রতি লক্ষে সবচেয়ে কম পুলিশ (মাত্র ৮১ জন)।
বিচার বিভাগের সূচকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে রাজস্থান, কেরালা ও মধ্যপ্রদেশ।
কারা ব্যবস্থার উন্নতিতে এগিয়ে ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ড।
আইনি সহায়তার দিক দিয়ে হরিয়ানা সবচেয়ে এগিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জাতীয় স্তরে প্রতি লক্ষে ১৫৫ জন পুলিশের হার, যা অনুমোদিত ১৯৭.৫-এর তুলনায় অনেক কম। ফলে জনসংখ্যা অনুযায়ী পুলিশ বাহিনীর ঘাটতি এখনো বড় সমস্যা।
বিচারব্যবস্থার সংকট ও পরামর্শ
প্রতিবেদনের ভূমিকায় সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কৌল বিচার ব্যবস্থার সংস্কারে জনচাপের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। তাঁর মতে, “এই সংস্কার সমাজের একটি দাবিতে পরিণত হওয়া উচিত। বিচার বিভাগ, সরকার এবং আমলাদের স্থিতাবস্থা ভাঙার সাহস দেখাতে হবে।”
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিচারব্যবস্থার জন্য বরাদ্দ বাজেটের বড় অংশই চলে যায় বেতনে, পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য তেমন কিছুই থাকে না, যা প্রশিক্ষণ এবং সেবার মানের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।