সংবাদদাতা, চাঁচল: স্বামীর অত্যাচারে দু’মাস ঘরছাড়া গৃহবধূ। মায়ের অবর্তমানে সেই অত্যাচার শুরু হয় দুই নাবালক সন্তানের উপর। পয়লা বৈশাখে গুণধর বাবার বেধড়ক মারধর খেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে আট কিমি হেঁটে মায়ের কাছে যায় নাবালক দুই ভাইবোন। সেখান থেকে মায়ের সঙ্গে চাঁচল থানার দ্বারস্থ হয় ভাইবোন। মঙ্গলবার স্বামীর বিরুদ্ধে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারের অভিযোগ চাঁচল থানায় দায়ের করেছেন রবীনা বিবি। জুয়া খেলার জেরে সংসার তছনছ হয়েছে। নিন্দার ঝড় উঠেছে চাঁচলে। সংসার ভাঙার অপরাধে পুলিসের কাছে স্বামীর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নির্যাতিতা মহিলা। যদিও অভিযুক্ত গা ঢাকা দিয়ে থাকায় তার কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নির্যাতিতা মহিলার অভিযোগ, স্বামী যা আয় করত, জুয়া খেলায় সব হেরে যেত। লক্ষ্ণীর ভাণ্ডার ও কৃষকবন্ধুর টাকা পেয়ে সংসার চালাতাম। সেই টাকায় সন্তানদের পড়াশোনায় খরচ করতাম। বাড়ির গৃহকর্তাকে শায়েস্তা করতে প্রতিবেশীদের বলা হলেও তাদের কথা তোয়াক্কা করেনি। জুয়া খেলার প্রতিবাদ করায় সংসার তছনছ হল।
গৃহবৃধূর অবর্তমানে দু’মাস ধরে ভাইবোন বাবার জন্য রান্না করে দিত। সকালে রান্না করে তবেই স্কুলে যেত। তারা একটি হাইস্কুলে পাঠরত। এদিন সব্জি না থাকায় রান্না করতে পারেনি তারা। দুপুরে খাওয়া না পেয়ে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় দুই ভাইবোনকে। প্রাণ বাঁচাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে জাতীয় সড়ক ধরে প্রায় আট কিমি হেঁটে চাঁচলে আসে তারা। চাঁচল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর পর মায়ের সঙ্গে থানায় গিয়ে অভিযোগ করে। মারধরের শিকার ছেলে বলে, বাবাকে আমরাই রান্না করে খাওয়াতাম। এদিন রান্না না হওয়ায় আমাদের খুব মারে। মা না থাকায় আমাদের প্রতিদিন মারধর করেছে।
স্থানীয় মালদহ জেলা পরিষদের সদস্য রাহেনা পারভিন বলেন, জানিনা কি নিয়ে বিবাদ। তবে জুয়া খেলা সংসারের উন্নতি হয় না, এটা গ্রামের লোকদের বুঝতে হবে। একটা সুষ্ঠুভাবে চলা সংসার সন্তানের ভবিষ্যত উজ্জ্বল করে। কিন্তু এইভাবে চললে ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। পুলিস বিষয়টি দেখুক। চাঁচল থানার এক আধিকারিক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনার পরে অভিযুক্ত এলাকায় গা ঢাকা দিয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।