• দুষ্কৃতীদের উপর নজর, ৩ হাজার সিসি ক্যামেরা বসাচ্ছে বাঁকুড়া জেলা পুলিস
    বর্তমান | ১৬ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: ভিনজেলার দুষ্কৃতীদের গতিবিধি নজরবন্দি করতে বাঁকুড়াকে তিন হাজার অত্যাধুনিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় মুড়ে ফেলতে চলেছে জেলা পুলিস। ইন্টারনেটের মাধ্যমে জেলা পুলিসের কর্তারা অফিসে বসেই ওইসব সিসি ক্যামেরার ফুটেজে নজর রাখবেন। ক্যামেরা বসানোর ক্ষেত্রে বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, সোনামুখীর পাশাপাশি খাতড়া, বড়জোড়ার মতো এলাকাকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বাঁকুড়া পুলিস লাইনে বিশেষ কন্ট্রোল রুম চালু করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ওই কন্ট্রোল রুম তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। রাজ্য পুলিসের কোনও শীর্ষস্তরের কর্তাকে দিয়ে ওই কন্ট্রোল রুম উদ্বোধন করানোর জন্য জেলা পুলিসের আধিকারিকরা অপেক্ষা করছেন।

    বাঁকুড়ার পুলিস সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় বর্তমানে দেড় হাজার সিসি ক্যামেরা রয়েছে। ওইসব পুরনো ক্যামেরার আধুনিকীকরণ করা হবে। সেগুলিকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুক্ত করা হবে। পাশাপাশি, জেলাজুড়ে নতুন দেড় হাজার আইপি(ইন্টারনেট প্রোটোকল) ক্যামেরা বসানো হবে। নতুন ক্যামেরা বসানোর ক্ষেত্রে আমরা বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, সোনামুখী, খাতড়া, বড়জোড়াকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর শহরে যথাক্রমে ২৫০ ও ১২০টি আইপি ক্যা঩মেরা বসবে। শীঘ্রই আমরা পুলিস লাইনের কন্ট্রোল রুমের উদ্বোধন করব। আগামী দিনে পুলিস লাইনে বসেই আমরা জেলার সর্বত্র নজর রাখতে পারব।

    উল্লেখ্য, বাঁকুড়ায় ক্রমশ ভিনজেলার দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বাড়ছে। বিভিন্ন গ্যাংয়ের পান্ডা ও সদস্যরা বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, খাতড়া, সোনামুখী সহ জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় ‘অপারেশন’ সারছে। সম্প্রতি বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরে পুলিস, আইনজীবী সহ অন্যান্যদের ল্যাপটপ, মোবাইল চুরি যাওয়ার ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। সিসি ক্যামেরায় ওঠা চোরের ছবি দেখেই পুলিস ওইসব ঘটনার কিনারা করে। তবে এরমধ্যে বেশকিছু ক্ষেত্রে অপরাধীদের হদিশ পেতে পুলিসকে নাকানিচোবানি খেতে হয়। তার মধ্যে খাতড়ায় সংবাদপত্র পরিবহণের গাড়িতে দুঃসাহসিক ছিনতাই, বাঁকুড়া শহরে একাধিক কেপমারির ঘটনা পুলিসকে বিড়ম্বনায় ফেলেছে। ওইসব ঘটনায় ঝাড়খণ্ডের দুষ্কৃতী গ্যাং জড়িত বলে পুলিস জানিয়েছে। অপরাধ সংঘটিত করার পর দুষ্কৃতীরা বাইকে বা চারচাকায় চেপে পুরুলিয়া হয়ে ঝাড়খণ্ডে চলে যাওয়ায় পুলিস তাদের নাগাল পায়নি। ক্যামেরায় নজরদারি বাড়লে সংশ্লিষ্ট রুটে দ্রুত নাকা চেকিং করে পুলিস দুষ্কৃতীদের পাকড়াও করতে পারবে বলে আধিকারিকরা মনে করছেন। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের পাশাপাশি আন্তঃজেলা সীমানাতেও একাধিক ক্যামেরা বসানো হবে। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান ও হুগলি জেলার সঙ্গে বাঁকুড়ার সংযোগকারী রাস্তাগুলিতে আধুনিক ক্যামেরা বসতে চলেছে। ফলে সন্দেহজনক কোনও যানবাহন জেলায় ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই তা পুলিসের নজরদারিতে চলে আসবে। জেলায় কোনও অপরাধ করার পর দুষ্কৃতীরা পালানোর সময় ক্যা঩মেরায় ওঠা ফুটেজ দেখে পুলিস তাদের পিছু ধাওয়া করতে পারবে। পুলিস লাইনের কন্ট্রোল রুম থেকে অনবরত থানাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে। সমন্বয়ের মাধ্যমেই পুলিস আধিকারিকরা কাজ করবেন। তার ফলে দুষ্কৃতীদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে পুলিসকর্তারা দাবি করেছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)