নতুন পোশাকে মন্দিরে পুজো ও বাঙালি ভোজে নববর্ষের প্রথমদিন কাটালেন বহরমপুরের মানুষ
বর্তমান | ১৬ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, বহরমপুর: বাংলা নববর্ষে বাঙালিয়ানায় মজল মুর্শিদাবাদ জেলা। সকাল থেকে নতুন পোশাকে মন্দিরে মন্দিরে পুজো দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিলেন ভক্তেরা। পরিবারের মহিলাদের পাশাপাশি বহু ব্যবসায়ী এদিন মন্দিরে পুজো দিয়েই দোকান খোলেন। পুজোপাঠের পাশাপাশি নতুন বছরে শহরের রেঁস্তোরাগুলির খাবারের টেবিল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড়ে ঠাসা ছিল। বছরের প্রথম দিন অধিকাংশ বাঙালি পরিবার নতুন পোশাকে পুজোপাঠ ও ভোজনে মজে ছিলেন।
মঙ্গলবার বাংলা নববর্ষে বহরমপুর শহরের সিংহভাগ মানুষ বিষ্ণুপুর কালীমন্দিরে পুজো ও অঞ্জলি দিয়েই বছর শুরু করেন। এদিন সকাল থেকে বিষ্ণুপুর কালীমন্দিরে পুজো দেওয়ার বিশাল লাইন পড়েছিল। পরিবারের মঙ্গল কামনার পাশাপাশি ব্যবসায় উন্নতির জন্য পুজো দেন বহু মানুষ। মন্দিরের সেবাইত তোতন পান্ডে বলেন, বিষ্ণুপুর মন্দিরে নববর্ষে পুজো দিতে ভক্তদের ঢল নামে। এবারও হাজার হাজার পূণ্যার্থী বিশেষ পুজোয় অংশ নিয়েছিলেন। গোরাবাজার জগন্নাথ মন্দিরে এদিন প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়েছিল। জগন্নাথ মন্দিরে বহু পূণ্যার্থী গঙ্গাস্নান সেরেই পুজো দিয়ে বাড়ি ফেরেন। মন্দিরের পুরোহিত রবি ঠাকুর বলেন, ভক্তরা বছরের প্রথমদিন পুজো দিয়ে মনস্কামনা জানান। বহরমপুরের মোহন মোড়ে দস্তকের উদ্যোগে বিশাল আকৃতির গণেশ প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করে পুজো ও হোমযজ্ঞ করা হয়।
নববর্ষের প্রথমদিনে কান্দির দোহালিয়া দক্ষিনা কালী মন্দিরেও ব্যাপক ভিড় জমে। সকাল থেকেই লম্বা লাইন পড়ে যায় মন্দির চত্ত্বরে। সেখানে পুজো দিতে আসেন ব্যবসায়ী, চিকিৎসক থেকে গৃহস্থরা। মন্দিরে পুজো দিতে এসে কান্দি এসএমওএইচ সৌমিক দাস বলেন, প্রতিবছরই এখানে নতুন বছরে পুজো দিতে আসি। সকলের মঙ্গল কামনা করি।
এদিকে এদিন ভোরের বৃষ্টির কারণে কান্দির দক্ষিণা কালী মন্দিরে প্রায় চারঘণ্টা দেরিতে পুজো শুরু হয়। ওই মন্দিরের প্রধান পুরোহিত প্রকাশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, অন্যবছর ভোর চারটে নাগাদ পুজো শুরু হয়ে যায়। তবে এদিন ভোরে আকাশের অবস্থা খারাপের জন্য মায়ের পুজো প্রায় চারঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়।
নতুন বছরে সতীপীঠ কিরীটেশ্বরী মন্দিরে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়েছিল। জিয়াগঞ্জের আমুইপাড়া কালীমন্দির, নশিপুরের জংলি কালীবাড়ি এবং লালগোলা রাজাদের কালীবাড়িতে বহু পুরুষ মহিলা পুজো দেন। ব্যবসায়ীরা পুজো দিয়ে মায়ের আর্শীবাদী ফুল নিয়ে দোকান খোলেন। ডোমকল মহকুমায় মন্দিরে সেভাবে ভিড় লক্ষ্য করা না গেলেও বর্ষবরণের উৎসাহ উদ্দীপনায় কোনও খামতি ছিলনা। রঘুনাথগঞ্জ শহরের বহু মন্দিরে এদিন বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। বর্ষবরণে রসনা তৃপ্তিও মেটান বহু বাঙালি পরিবার। বহরমপুরের রেঁস্তোরাগুলিতে ১৬ আনা বাঙালি খাবারের চাহিদা ছিল তুঙ্গে।