• রামচন্দ্রপুরে চম্পা খালের উপর কংক্রিটের নতুন ব্রিজের দাবি, পদক্ষেপের আশ্বাস মন্ত্রীর
    বর্তমান | ১৬ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কাঁথি: এগরার নেগুয়া-কসবাগোলা রাস্তায় রামচন্দ্রপুরে চম্পা খালের উপর কংক্রিটের নতুন ব্রিজের দাবি আজও পূরণ হয়নি। প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কয়েক দশকের পুরনো, জীর্ণ, সংকীর্ণ ব্রিজের উপর দিয়ে এখনও যাতায়াত করছেন সংশ্লিষ্ট ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র সহ আশপাশের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানুষজন। ক্রমশ ব্রিজটি ক্ষয়িষ্ণু ও দুর্বল হয়ে পড়ছে। এলাকাবাসীর দাবি, নতুন ব্রিজ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হোক। তবে কবে তাঁদের দাবি পূরণ হবে, তা নিয়েও সংশয়ের রয়েছে এলাকাবাসী। যদিও এলাকার জনপ্রতিনিধিরা দাবি পূরণ হবে বলে আশ্বস্ত করছেন। 

    এলাকার বাসিন্দাদের সুষ্ঠু যাতায়াতের কথা মাথায় রেখে ১৯৮০ সালে  সেচদপ্তর ব্রিজটি তৈরি করেছিল। ব্রিজটির উপর দিয়ে ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র, পাঁচরোল, সাহাড়া ছাড়াও জুমকি পঞ্চায়েতের একাংশের বাসিন্দারা আসা-যাওয়া করেন। এমনকী পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের মোহনপুরের একাংশের বাসিন্দারাও ব্রিজটিকে ব্যবহার করেন। রাস্তাটি দিয়ে মোহনপুরের দিক থেকে আসা পণ্যবাহী লরি এগরা সহ বিভিন্ন এলাকায় যায়।  কসবাগোলা-কলকাতা ও শীপুর-কলকাতা রুটের দুটি বাসও এই রাস্তায় যাতায়াত করে। এছাড়া অন্যান্য যানবাহন তো রয়েছেই। রামচন্দ্রপুরে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মির্জাপুরে বাজার থাকায় প্রচুর মানুষের যাতায়াত রয়েছে। তাই সবদিক দিয়ে এই রাস্তা এবং ব্রিজটি গুরুত্বপূর্ণ। 

    যদিও পুরনো ধাঁচের এই ব্রিজটি অন্যান্য ব্রিজগুলির থেকে আলাদা। খুবই  সংকীর্ণ। দুটি বড় গাড়ি একসঙ্গে পারাপার করতে পারে না। বর্তমানে ব্রিজটি জীর্ণ দশা। দু’দিকের গার্ডওয়াল কবেই ভেঙে গিয়েছে। থামগুলিও নড়বড়ে অবস্থা। তাসত্ত্বেও প্রতিনিয়ত বহু যানবাহন ব্রিজের উপর যাতায়াত করে চলেছে। গার্ডওয়াল ভেঙে এমন অবস্থা হয়ে গিয়েছে, কোনও যানবাহন যদি নিয়ন্ত্রণ হারায়, তাহলে সোজা নীচে খালে পড়বে। রয়েছে প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কাও। বছর চারেক আগে ব্রিজটি নিয়ে নড়াচড়া শুরু হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, নতুন ব্রিজ তৈরি হবে। বিকল্প হিসেবে পাশে একটি কাঠের ব্রিজ তৈরি করা হয়। তার উপর দিয়ে ছোট যানবাহন যাতায়াত করে। কিন্তু নতুন ব্রিজ তৈরির উদ্যোগ ফাইলচাপা পড়ে যায়। এদিকে কাঠের ব্রিজটিরও বেহাল দশা হয়ে গিয়েছে। তার উপর দিয়ে সেভাবে যাতায়াতও হয় না। পুরনো ব্রিজের উপর দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল প্রশাসনিকভাবে নিষিদ্ধ, এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জেলাশাসকের পক্ষ থেকে টাঙানো হয়েছে। কিন্তু বিকল্প কোনও উপায় না থাকায় প্রতিদিন বাস, লরি সহ অন্যান্য ভারি যানবাহন চলছেই। 

    স্থানীয় বাসিন্দা, সিপিএম নেতা তপন প্রধান বলেন, আমরা নতুন ব্রিজ তৈরির দাবিকে সামনে রেখে ইতিপূর্বে বিভিন্ন মহলে ডেপুটেশন দিয়েছি। অনেক আন্দোলন করেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। ব্রিজটির যা অবস্থা, তাতে যে কোনও সময়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তৃণমূল এতদিন ক্ষমতায় থেকেই কিছুই করতে পারল না। এগরার তৃণমূল বিধায়ক তরুণকুমার মাইতি বলেন, নতুন কংক্রিটের ব্রিজের ব্যাপারে একটি স্কিম তৈরি করা হয়েছে। সেতুর ডিজাইন নিয়ে একটি পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে। সবকিছুই সেচদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়াকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। মন্ত্রী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করছি, আগামীদিনে এই ব্রিজ অনুমোদন এবং কাজ শুরু হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)