সাইকেল নিয়ে দেশ ঘুরে সম্প্রীতির বার্তা ৭৪ বছরের কংগ্রেস কর্মীর
বর্তমান | ১৬ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, মানকর: মানুষে মানুষে বিভেদ, হিংসা নয়। সাম্প্রদায়িক হানাহানি নয়। সকলকে মিলেমিশে থাকতে হবে। কারণ, সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই। দেশজুড়ে সাইকেল যাত্রা করে এমনই বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন কালনার সিমলনের ৭৪ বছর বয়সি প্রবীণ কংগ্রেস কর্মী প্রভাত দাস। প্রায় সারা দেশ ঘুরে মঙ্গলবার তিনি উপস্থিত হয়েছিলেন কাঁকসায়। সেখানে দলীয় নেতা-কর্মীরা কংগ্রেস কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে তাঁকে সম্মান জানান।
তিনি জানান, গত ২১ ফেব্রুয়ারি একাধিক দাবিকে সামনে রেখে সাইকেল নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন। কালনা থেকে বেরিয়ে প্রথমে পাঞ্জাব যান। পরে সেখান থেকে হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও ঝাড়খণ্ড হয়ে এই রাজ্যে পৌঁছন। এদিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ কাঁকসায় উপস্থিত হলে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে তাঁকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যায়।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রভাতবাবু প্রথম থেকেই কংগ্রেস দলের একনিষ্ঠ কর্মী। দলের হাই কমান্ডের সঙ্গেও তাঁর পরিচিতি রয়েছে। সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে দলের দিল্লি নেতারা সকলেই এক ডাকে চেনেন প্রভাতবাবুকে। শুধু তাই নয়, এবারে সাইকেল নিয়ে বার্তা দেওয়ার সময় সঙ্গীও হয়েছিলেন রাহুল গান্ধী।
উল্লেখ্য, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি, কৃষি ঋণ মকুব, পেনশনের ব্যবস্থা, বিদ্যুতের বিল না বাড়ানোর মতো বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে। পাঞ্জাবে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গেও কথা বলেছেন প্রভাতবাবু। তিনি বলেন, সারাদেশে সাম্প্রদায়িক হানাহানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু আমার কাছে একটাই ধর্ম সেটি হল মানব ধর্ম। আমি চাই সম্প্রদায়মুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত অখণ্ড ভারত গড়ে উঠুক। তিনি জানান, অতীতের কংগ্রেস কর্মীরা ভারতের স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময় থেকেই দেশ গড়ার কাজে তাঁদের অবদান রেখেছেন ভবিষ্যতেও নবীন প্রজন্মও তা রাখবেন। প্রভাতবাবুকে পেয়ে এদিন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা প্রথমে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর সঙ্গে সকলে আলাপচারিতায় মেতে ওঠেন। দলীয় কর্মী ধর্মেন্দ্র শর্মা, মোজাম্মেল হক বলেন, এই বয়সে প্রভাতবাবু যেভাবে দেশজুড়ে শান্তির বার্তা বহন করছেন তা অভূতপূর্ব। ওঁর মতো কংগ্রেস কর্মীকে সামনে থেকে দেখতে পেয়ে আমাদের জীবন ধন্য। কাঁকসা ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি পূরব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সারাদেশে সাম্প্রদায়িক অশান্তি ও বিভেদ তৈরি হচ্ছে। এই দুঃসময়ে উনি সুবার্তা নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ওনার এই বয়সে এই কর্মসূচি দলীয় কর্মীদের মনোবল বৃদ্ধি করবে। তবে খুব বেশিক্ষণ কথা বাড়ালেন না এই প্রৌঢ় কংগ্রেস কর্মী। সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সাইকেলে চেপে বসলেন। তারপর হাত নাড়াতে নাড়াতে এগিয়ে চললেন সামনের দিকে। আরও বহু মানুষকে শোনাতে হবে শান্তির কথা।