নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: পরিবারের সচেতনতার অভাবেই মৃত্যু হল ন’বছরের এক বালকের। বিষধর সাপ কামড়েছিল তাকে। পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে না নিয়ে ওই বালককে নিয়ে গিয়েছিলেন ওঝার কাছে। ভেবেছিলেন, ঝাড়ফুঁকেই নেমে যাবে বিষ। এই অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারের কারণে প্রাণ গিয়েছে হাড়োয়ার আটপুকুর ষষ্ঠীতলার বাসিন্দা মণীশ মণ্ডলের।
সোমবার বিকেলে মণীশ বাড়ির পাশের বাগানে খেলছিল। সেই সময় একটি বিষধর সাপ তার পায়ে ছোবল মারে। সাপে কাটা ছেলেকে বাড়ির লোকজন হাসপাতালের বদলে নিয়ে যায় ওই পাড়ারই বাসিন্দা এক ওঝার কাছে। সে কয়েক ঘণ্টা ধরে ঝাড়ফুঁক করলেও তাতে লাভের লাভ কিছু হয়নি। উল্টে কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই বালক অচেতন হয়ে পড়ে। শেষমেশ তাকে হাড়োয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিস অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে।
স্থানীয় লোকজন ওই নাবালকের মৃত্যুর জন্য ওই পরিবারকেই দায়ী করেছেন। তাঁদের দাবি, সাপে কামড়ানোর পর প্রতিবেশীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু তাতে আমল দেয়নি মণ্ডল পরিবার। উল্টে তাঁরা ছেলেকে ঝাড়ফুঁক করানোর জন্য যান ওঝার বাড়িতে। ঝাড়ফুঁকের ফলে সুস্থ তো হয়নি, বরং কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য হাজি নবাব আলি মোল্লা বলেন, সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে সব রকম ব্যবস্থা আছে। ঝাড়ফুঁক করে কখনও লাভ হয় না। সময়মতো তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারলে হয়তো বেঁচে যেত ওই নাবালক। পরিবারের অজ্ঞানতা, সচেতনতার অভাব ও কুসংস্কারের কারণেই মৃত্যু হয়েছে মণীশের। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে সাপে কামড়ানো রোগী ও তাদের পরিবারকে সচেতন করতে বিশেষ শিবির করা হবে।