বুধবার সকাল আটটা থেকে শিয়ালদহ দক্ষিণের একাধিক শাখায় থমকে গিয়েছে ট্রেন চলাচল। কাকদ্বীপ, নামখানা, লক্ষ্মীকান্তপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ রুটে বন্ধ রয়েছে লোকাল ট্রেন। যদিও বারুইপুর ও সোনারপুর লাইনে কিছু ট্রেন চলছে। কিন্তু দক্ষিণের যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। রেল অবরোধের জেরে কাজের দিনে সমস্যায় পড়েছেন অসংখ্য নিত্যযাত্রী।
অবরোধকারীদের অভিযোগ, ১২ বগির ট্রেনে আগে যেখানে ২টি মহিলা কামরা থাকত। বর্তমানে তা বাড়িয়ে ৪টি করা হয়েছে। তার সঙ্গেই রয়েছে ২টি ভেন্ডার কামরা। ফলে মোট ৬টি কামরা সাধারণ পুরুষ যাত্রীদের জন্য থাকছে। নিত্যযাত্রীদের প্রশ্ন, মাত্র ৬টি কামরায় লক্ষ লক্ষ যাত্রী কী ভাবে যাতায়াত করবেন? কর্মস্থলে পৌঁছনো, ট্রেন ধরার সময়সূচি সব ভেস্তে যাচ্ছে। এই সমস্যা দূর করার দাবিতে আজ সকাল থেকেই রেল অবরোধে নেমেছেন দক্ষিণের একাধিক স্টেশনের যাত্রীরা।
অবরোধ শুরু হয় মূলত কাকদ্বীপ লাইনের ধপধপি স্টেশন থেকে। ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের স্টেশনেও। স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বসে পড়েন যাত্রীরা। ব্যানার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁদের বক্তব্য, রেল কর্তৃপক্ষ কোন যুক্তিতে ১২ বগির মধ্যে এতগুলি কামরা সংরক্ষিত করে রাখছেন? নারী নিরাপত্তার প্রয়োজন অবশ্যই রয়েছে, কিন্তু তার জন্য সাধারণ যাত্রীদের উপরে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না। অন্যদিকে, রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মহিলা যাত্রীদের সংখ্যা বেড়েছে। সেই কারণেই তাঁদের জন্য বাড়তি কামরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে পুরুষ যাত্রীদের দাবি বিবেচনা করে ভবিষ্যতে সমাধান খোঁজা হবে বলে জানানো হয়েছে। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও আরপিএফ মোতায়েন করা হয়েছে।
যাত্রীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই এই সমস্যা চলছিল। তবে কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত না করায় বাধ্য হয়েই তাঁরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ট্রেন চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে। এই ঘটনার জেরে গোটা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহু অফিস-আদালত, বাজার ও স্কুলে উপস্থিতি কমেছে। বহু মানুষ কাজ বা জরুরি প্রয়োজনে শহরে আসতে পারেননি। নিত্যযাত্রীদের দাবি, দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না হলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।